শ্বশুরবাড়ির শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর ২০২০, ২০:২৫

বগুড়ায় শাশুড়িকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সদর থানায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ করেন আনোয়ার হোসেন রানার শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগম।

এজাহারে মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারাকেও অভিযুক্ত করেন দেলওয়ারা। তবে অভিযোগটি এখনও মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি থানায়। পুলিশ বলছে তদন্ত শেষে মামলা রেকর্ড হবে।

এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর রানার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন দেলওয়ারা বেগমের চার মেয়ে। তারা হলেন মাহবুবা খানম, নাদিরা সরিফা সুলতানা খানম, কানিজ ফাতেমা ও তৌহিদা সরিফা সুলতানা।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা দেলওয়ারা বেগমের বড় মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানার দ্বিতীয় স্বামী। আকিলার প্রথম স্বামী ছিলেন বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুর্জয় বাংলা পত্রিকার সম্পাদক হাজী সাইফুল ইসলাম। ওই সময় রানা ওই পত্রিকার বিজ্ঞাপন শাখার কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। হাজী সাইফুল ইসলাম মারা গেলে আনোয়ার হোসেন রানা আকিলা সরিফাকে বিয়ে করেন। বর্তমানে রানা বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক মুক্তজমিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। পাশাপাশি রানা বগুড়া শহরের নওয়াববাড়ী সড়কের দেলওয়ারা-শেখ সরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও জেলা বিড়িশিল্প মালিক সমিতির সভাপতি এবং জেলা দোকানমালিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব পদে রয়েছেন।

দেলওয়ারা বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন, তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত পাঁচ বছর জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা তার বাড়িতে থাকেন। অসুস্থতার সুযোগে ও তাদের প্রস্তাবে মৌখিকভাবে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেন তিনি। পরবর্তীতে সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরির ম্যানেজার কাম-ক্যাশিয়ার নজরুল ইসলাম, সরিফ সিএনজি লিমিটেডের ম্যানেজার হাফিজার রহমান ও দেলওয়ারা সেখ শরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেটের ম্যানেজার এবং রানার সহকারী তৌহিদুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি, প্রতারণা ও দুর্নীতির আশ্রয় নেন।

তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক, এফডিআর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে ভুয়া কাগজ সৃষ্টি করে ২০১৫ সালের ১ জুন থেকে ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের এফডিআর ভেঙে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এছাড়া ব্যবসা ও ব্যাংক থেকে আরো ৫০ কোটি টাকা উত্তোলনের পর আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া রানা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এসব ফাঁস না করতে নিষেধ করেন তাকে। হত্যার হুমকি দেয়ায় তিনি এতদিন গোপন রাখেন বিষয়টি।

গত ২১ সেপ্টেম্বর জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, মামলা এখনও রেকর্ড হয়নি। একশ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এটি। এটার জন্য প্রাথমিক একটি তদন্তের প্রয়োজন আছে। আমি আজকে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। মামলা রেকর্ড কবে হবে আগেই বলা যাবে না। এটার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা রেকর্ড করা হবে।

আনোয়ার হোসেন রানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শ্বশুরের সম্পত্তির ভাগ–বাটোয়ারা নিয়ে তাদের পারিবারিক ঝামেলা চলছে। ভায়রা ও শ্যালিকারা তার শাশুড়িকে জিম্মি করে থানায় মিথ্যা এজাহার দিতে বাধ্য করেছেন। এছাড়া ভায়রারা জামায়াত-বিএনপির ডোনার; তারা তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশে ষড়যন্ত্র করে আসছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :