কামালের মুখোমুখি মন্টুরা ১১ জন

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২০, ০৯:০৩

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

অন্যদল থেকে আসা যেসব নেতাকে নিয়ে তার দলের ভিত শক্ত রাখতে চেয়েছিলেন সেসব নেতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বর্ষীয়ান রাজনীতিক গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে। সম্প্রতি গণফোরামের বিদ্রোহী একটি অংশ সভাপতির নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আলাদা কাউন্সিলের ডাক দেন। এ লক্ষ্যে দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে কমিটিও করেছে কামাল হোসেনের একসময়ের ‘বিশ্বস্ত’ ১১ নেতা। ডিসেম্বরে কাউন্সিল করে নতুন নেতা নির্বাচন করার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা। তবে এর আগে আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে একইসময়ে মুখোমুখি হতে চলেছে কেবল ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা গণফোরামের দুই অংশ।

প্রবীণ রাজনীতিক কামাল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন অথচ এখন বিদ্রোহী অংশের নেতা হিসেবে আছেন তাদের মধ্যে বেশ সক্রিয় ১১ জন। এর মধ্যে মোস্তফা মহসিন মন্টু ছাড়াও অন্যরা হলেন- দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাবেক নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, আসাদুজ্জামান, খান সিদ্দিকুর রহমান, আবদুর রায়হান, মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, ফজলুল হক সরকার, এম এ মতিন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন নেতা আছেন যারা প্রত্যেকেই কামাল হোসেনের বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে ছিলেন।

এদিকে দুই অংশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একই দিনে একই স্থানে দুই গ্রুপের কর্মসূচি থাকলেও এ নিয়ে তারা কোনো আশঙ্কা দেখছেন না। দুই গ্রুপের ঘোষণা অনুযায়ী, কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণফোরাম ১৭ অক্টোবর প্রেসক্লাবের ভেতরে কেন্দ্রীয় কমিটির সভা করবে। আর ওইদিনই মোস্তফা মহসিন মন্টুদের অংশ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনসহ সরকারের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে।

মন্টু-সুব্রত অংশের নেতা লতিফুল বারী হামিম জানিয়েছেন, গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মতিঝিলের দলীয় কার্যালয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক ছিল। বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও বৈঠকে আগামী ২৬ ডিসেম্বরের জাতীয় কাউন্সিল সফল করতে প্রস্তুতি পরিষদের ১৪টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে একই দিনে কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন অংশের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক মোশতাক আহমদ বলেন, আমরা ১৭ অক্টোবর প্রেসক্লাবে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সভা ডেকেছি। তারা মানববন্ধন করবে তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। গণফোরামের বর্তমান কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির কেউ তাদের সঙ্গে নেই। যারা গত কমিটিতে ছিলেন কিন্তু নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে নেই তারাই এসব করছেন।

জানা গেছে, শুধু পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি গণফোরামের দুই অংশ। ইতিমধ্যে মন্টু গ্রুপের নেতারা অনেকটা ‘দখলে’ নিয়েছেন গণফোরামের মতিঝিলের কার্যালয়। এই অবস্থায় পল্টনের আজাদ টাওয়ারে নতুন অফিস নিয়েছে কামাল হোসেনের গ্রুপ।

এদিকে গতকাল সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেছেন, ডিসেম্বরের কাউন্সিলে যদি ড. কামাল হোসেন অংশ না নেন তাহলে বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করা হবে।

দুই পক্ষের যখন এই অবস্থা তখন নতুন করে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের আশঙ্কা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘ভালো, মন্টু ভাইদের স্টাইলে তারা কী করতে চায় সেটা বুঝতেই পারছেন। তারা আমাদের অনেক ভয় পাচ্ছে। ভয় পেলে মানুষ এরকম করে। ইটস ওকে। কোনো সমস্যা নেই।’

একই দিনে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ডাকায় নেতাদের আসতে বাধা কিংবা বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন কি-না জবাবে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি জানি না। মানববন্ধন ভালো জিনিস, তারা করুক। এটা নিয়ে আগে থেকে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।’

(ঢাকাটাইমস/০৪অক্টোবর/ডিএম/জেবি)