ডিজিটাল জঞ্জাল

শেখ আনোয়ার
 | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৫৭

এখন ডিজিটাল যুগ। বাস্তবতার কারণেই ডিজিটাল প্রযুক্তি অপরিহার্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। হবে না কেন? ডিজিটাল প্রযুক্তির কারনে বর্তমান জীবন আরও আধুনিক আরও সহজ হয়ে গেছে। মহামারী করোনাকালে ডিজিটাল বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় বেড়ে গেছে ডিজিটাল কদর। সংক্রমণে ছোঁয়াচ এড়াতে বাধ্য হয়ে অনেকে শিখে নিয়েছেন অজানা ডিজিটাল জগতের নতুন কায়দা কানুন। আপনার ই মেইল একাউন্টে আগত জাঙ্ক মেইলের সমস্যার সমাধানও আপনি আপন মনে করতে পারেন। মাউসের এক ক্লিকেই সমাধান করতে পারছেন। কিন্তু ভূত যখন সর্ষেতেই দেখা দেয় অর্থাৎ আপনার ডিজিটাল ডিভাইস, গেজেট, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারটা নিজেই যখন জাঙ্কে পরিণত হয়, তখন? এর সমাধান কি? ব্যাপারটা এভাবে কি কখনো ভেবে দেখেছেন?

জী হ্যাঁ। এবার একটু ভেবে দেখুন। আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মনিটর, সিপিইউ, আইপিএস, স্মার্টফোন, লিথিয়াম ব্যাটারি, ইউএসবি পেনড্রাইভ, মেমোরি কার্ড, কার্ড রিডার, স্পিকার, ক্যাচিং আর আনুষঙ্গিক নানান যন্ত্রপাতি আপনার টেবিলের উপর কি পরিমাণ জায়গা দখল করে রেখেছে? এই জায়গাকে ৬৩ মিলিয়ন দিয়ে গুণন দিন। ঠিক এ পরিমাণ জায়গা দখলকারী-স্মার্টফোন, গেজেট, ও কম্পিউটার নামক ডিজিটাল ডিভাইসের বর্জ্য শুধুমাত্র গতবছর তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ভাবা যায়?

আগেই বলা হয়েছে, আধুনিক জীবনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের মনিটর, লিথিয়াম ব্যাটারি ও যন্ত্রাংশ, ল্যাপটপ, চার্জার, কেবল, স্মার্টফোন, অ্যান্ড্রয়েড গেজেট, প্রিন্টার ও প্রিন্টারের টোনারসহ বিচিত্র ধরনের ইলেকট্রনিক ডিজিটাল খেলনার ব্যবহার বেড়ে গেছে। বলা যায়, এসব ডিজিটাল ডিভাইস হলো এখন আধুনিক মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি। এছাড়া আরও কিছু ডিজিটাল ডিভাইস রয়েছে। যেমন- ফটোগ্রাফি ড্রোন, সিসি ক্যাম, দূর নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি বাতি, প্রজেক্টর, এমপিথ্রি প্লেয়ার, ৪ কে টিভি, ডিজিটাল ক্যামেরা, ডিজিটাল মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ডিজিটাল ওয়াশিং মেশিন, ফটোকপিয়ার ও ফ্যাক্সসহ নানান ডিজিটাল ডিভাইস। এসব পণ্যের ব্যবহারকাল বা লাইফটাইম এক সময় শেষ হয়ে যায়। ডিজিটাল যন্ত্র তখন অকার্যকর, নষ্ট হয়ে যায়। ডিজিটাল জিনিস তখন পরিত্যক্ত ভ্রাম্যমাণ ভাঙাড়ির ক্রেতার কাছে কিছু কিছু অংশ বিক্রি করা হয়। ডিজিটাল বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন কিংবা ভাগাড় নেই বলে বাকি অংশ ফেলে দেয়া হয় যত্রতত্র। এমনকি বাড়ির আশপাশের পুকুর, নদী, ডাস্টবিনেও ফেলে দেয়া হয়। এসব পরিত্যক্ত ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি বা এর অংশ বিশেষকেই বলে ডিজিটাল ওয়েস্ট বা ডিজিটাল বর্জ্য। এসব ডিজিটাল বর্জ্যের মধ্যে অনেক বিষাক্ত পদার্থ ও রাসায়নিক যৌগ রয়েছে। যা খোলা আকাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় রোদে এবং তাপে নানাভাবে বিক্রিয়া করে। অনেক সময় রোদে ফেলে দেয়া ‘ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট’ (আইসি) থেকে নির্গত হয় ক্ষতিকর বিকিরণ। এসব ডিজিটাল বর্জ্য পানিতে ফেলে দিলে বা মাটিতে পুঁতে রেখে দেয়ার পরও বিষাক্ত থাবা বন্ধ থাকে না। গবেষকরা বলেন, ‘ডিজিটাল বর্জ্য অটিজম ও মানসিক বিকাশ না হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব কঠিন বর্জ্য থেকে দূষণ ছড়িয়ে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপসহ নানান রোগব্যাধি।’

এসব ডিজিটাল যন্ত্রপাতির বর্জ্যে থাকে মানবস্বাস্থ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের বহু ক্ষতিকর উপাদান। অথচ আমাদের দেশের অনেক মানুষ এখনো তা জানেন না। তাই এসব ডিজিটাল পরিত্যক্ত বর্জ্য হয়ে উঠে শিশুদের খেলার উপকরণ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিংয়ের ৬নং রোডে মৃতপ্রায় খালের ধারে পাঁচ থেকে আট বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের জটলা। আশ-পাশে মাঠ নেই, তাই সেখানেই তাদের খেলার জায়গা। খেলার কোনো সরঞ্জাম নেই। তারা খেলছে পুরনো কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ দিয়ে। মাঝে মধ্যে অকেজো মোবাইল সেট দিয়ে সেলফি তোলার ভঙ্গিতে খেলায়ও মেতেছে! অথচ তাদের কেউ জানে না, এটা তাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেক শিশু এ কারনে প্রতিবন্ধিতার শিকার হতে পারে। শুধু শিশুরা কেনো? বিষয়টা তাদের মা-বাবাও হয়তো জানেন না। গবেষণার তথ্যানুযায়ী, ডিজিটাল বর্জ্য রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ায় প্রায় ৫০ হাজার শিশু জড়িত রয়েছে। এদের প্রায় ৮৩ শতাংশ শিশু ব্রেইন, কিডনি, ফুসফুস ড্যামেজ, উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক বিষন্নতা, নার্ভ সিস্টেমের দুর্বলতা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, পঙ্গুত্বসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়। এদের মধ্যে থেকে বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ শিশু মারাও যাচ্ছে। ব্যাপারটা কল্পনা করা যায়?

একযুগ আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার শুরুতে দেশের মানুষের যে একটা বড় অংশ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করছে তাদের অনেকের কম্পিউটারের লাইফটাইম বা জীবনকাল এতদিনে নিশ্চয় শেষ হয়েছে বা হওয়ার পথে। দেখা যাচ্ছে পুরো সিস্টেম না হলেও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। বাধ্য হয়ে সেসব যন্ত্রাংশ ফেলে দিতে হচ্ছে। এসবের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, ডিজিটাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজার অর্থনীতিতে টিকে থাকতে মূল্য কমানোর প্রতিযোগিতায় নামে। সঙ্গে সঙ্গে এসব ডিজিটাল যন্ত্রের উৎপাদনে মূল্যবান ধাতুর ব্যবহার কমিয়ে দেয়া হয়। যার ফলে স্মার্টফোন, গেজেট ও কম্পিউটারের মতো ডিজিটাল পণ্যের লাইফটাইমও কমে আসছে দিন দিন। অকালে নস্ট হওয়া, নীরবে নষ্ট হয়ে যাওয়া ডিজিটাল এসব পণ্যের বর্জ্য পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। আমাদের দেশে কি পরিমাণ ডিজিটাল বর্জ্য তৈরি হচ্ছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও পরিমাণটা নেহায়েৎ কম হবে না এবং তা ক্রমবর্ধমান।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিএ) পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ‘বাংলাদেশে প্রতিবছর এক কোটি টন ডিজিটাল বর্জ্য তৈরি হয়। যার মধ্যে পরিত্যক্ত মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, প্রিন্টার, কম্পিউটারের মতো শুধু ইলেকট্রনিক বর্জ্য তৈরি হয় চার হাজার টন।’ পরিসংখ্যান মতে, রাজধানীতে ২০১৬ সালে এক লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন ডিজিটাল বর্জ্য বের হয়েছে। এর মধ্যে বড় একটা অংশ স্মার্টফোনের ডিজিটাল বর্জ্যও রয়েছে। আগামী ২০২১ সালে এই ডিজিটাল বর্জ্য প্রায় এক হাজার ১৭০ টনে পৌঁছবে। ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের ব্যবহার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এসব পণ্যের বর্জ্যও বাড়ছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে এ বর্জ্যের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। জানা যায়, ডিজিটাল বর্জ্য রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ৯টি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবিসহ বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছ থেকে এসব ডিজিটাল বর্জ্য সংগ্রহ করে থাকে। বর্জ্যগুলো প্রথমে নিজ নিজ কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর ইলেকট্রনিক বর্জ্য আলাদা করা হয়। মোবাইল ফোনের সার্কিট বোর্ড, টেলিভিশনের সার্কিট বোর্ড, মোবাইল অপারেটরগুলোর টাওয়ার থেকে সংগ্রহ করা সস্তা দামের বর্জ্যগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। যেমন, প্রতি কেজি মোবাইল সার্কিট বোর্ড বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ২০০ টন অকেজো ইলেকট্রনিক বর্জ্য যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ওসব দেশে পুনঃ প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বাকিটা ছড়িয়ে পড়ছে খাল বিল, ডোবা নালা আর সবুজ মাঠে-প্রান্তরে। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ইলেকট্রনিক পণ্যের পুনঃ প্রক্রিয়াজাতকরণের কারখানা গড়ে ওঠেনি। এই কারখানা করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অথচ দেশে প্রক্রিয়াজাত করতে পারলে এগুলো অনেক মূল্যবান ধাতুতে পরিণত হতে পারতো।

গবেষকরা বলেন, ‘ডিজিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রধানত দু’টো কারণে প্রয়োজন। প্রথমত, এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে ও দ্বিতীয়ত, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বা টেকসই উন্নয়নের জন্য।’ ডিজিটাল যন্ত্র, স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাব, কোন ধরনের বর্জ্যে কি পরিমাণ, কি ধরণের পদার্থ থাকে তা জেনে যাওয়া যাক। ডিজিটাল যন্ত্র থেকে খুলে নেয়া শুধুমাত্র একটি ইলেক্ট্রনিক বোর্ড থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য পদার্থের পরিমাণ, পাউন্ড এ উল্লেখ করে দিয়েছে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্ক। যেমন, প¬াস্টিক ৬০০, কপার ২৮৬, আয়রন ৯০, ব্রোমিন ৫৬, লেড ৫৪, টিন ৪৪, নিকেল ৪০, এন্টিমনি ২২, সিলভার ১, ক্যাডমিয়াম ০.৭৯, অলিবডেনাম ০.৩১, বেরিয়াম ০.১৮, কোবাল্ট ০.১৭, সেরিয়াম ০.১০, প্লাটিনাম ০.০৭, মারকারি, ০.০২ পাউন্ড। গবেষকরা জানান, কম্পিউটারের একটা মনিটরের ক্যাথোড রে টিউবে (সিআরটি) সাধারণত ৭-৮ পাউন্ড লেড বা সীসা থাকে। এই লেড বা সীসা মানুষের স্নায়ুতন্ত্র, রক্ত সংবহনতন্ত্র এবং কিডনির অশেষ ক্ষতি করে থাকে। শিশুদের মস্তিস্কের বিকাশ ব্যাহত করে। আমাদের দেশেও যে বিপদটা বেড়েই চলেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এছাড়া স্মার্টফোনের ইলেক্ট্রনিক সার্কিটের চিপ রেসিস্টর, সেমিকন্ডাকটর, ইনফ্রারেড ডিটেক্টর ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হয় ক্যাডমিয়াম। এই ক্যাডমিয়াম কিডনির ক্ষতি করে থাকে। গোটা পৃথিবীতে বার্ষিক যে পরিমাণ মারকারি ব্যবহার করা হয় তার ২২% ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্রপাতিতে। এই মারকারি মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটিয়ে থাকে।

ডিজিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে এদেশের ব্যবহারকারীদের ধারণা ও সচেতনতা খুবই সীমিত। ধরা যাক, আপনি হয়তো ডিভিডি, সিডি বা পেনড্রাইভে করে কোনো ডকুমেন্ট নিয়ে যাচ্ছেন প্রিন্ট আউট নেওয়ার জন্য। দোকানে গিয়ে দেখলেন ফাইলটা খুলছে না। বুঝলেন- আপনার ফ্লাশ ডিস্ক, মেমোরি কার্ড নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর এটা কি করবেন? সোজা উত্তর ফেলে দেবেন। কিন্তু কোথায়? সেটা আমাদের কারো জানা নেই। এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই আউট অব সাইট, আউট অব মাইন্ড, পদ্ধতি অবলম্বন করছি। অর্থাৎ চোখের আড়াল হলেই হলো। ব্যস। এগুলো কোথায় যাচ্ছে কি হচ্ছে তা আমাদের আর বিবেচ্য বিষয় থাকে না। এখন সময় হয়েছে এ বিষয়ে ভাবা জরুরি। অনেক সময় অনেক যন্ত্র মেরামত করলেই চলে। নিজের ব্যবহার করা মোবাইল ফোনটা অকেজো হয়ে গেলে বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেয়ার আগে মেরামত করে ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। অনেকে কম্পিউটার আপগ্রেড করার জন্য পুরনো যন্ত্রপাতি খুলে ফেলেন। এগুলো পুন:ব্যবহারের জন্য বিক্রি করে দেয়া যেতে পারে। তবে আমাদের দেশে ইলেক্ট্রনিক সার্কিট মেরামত করার মতো সে রকম দক্ষ প্রতিষ্ঠান এখনো গড়ে উঠেনি। তাছাড়া ডিজিটাল বর্জ্য সমস্যা আগে এতোটা প্রকটও ছিলো না। এর উৎপত্তি হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী যে ‘বুম’ সৃষ্টি হয়েছে তারপর থেকে। ডিজিটাল বাংলাদেশ জুড়ে ডিজিটাল পণ্যের বাজার যেমন বেড়েছে পাশাপাশি বেড়েছে ডিজিটাল বর্জ্য দূষণের মাত্রা। গবেষকদের মতে, ‘পুনঃ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় অকেজো হয়ে যাওয়া ডিজিটাল পণ্য ভয়াবহ আকারে পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল বর্জ্যের কারণে ঘটছে জলবায়ুর পরিবর্তন। এই বর্জ্য বিশ্বব্যাপী আগামী দিনে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।’

ডিজিটাল অগ্রগতি ঠেকানো যাবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল বর্জ্য একটি বড় ধরনের সমস্যা হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে আগামী দিনে ডিজিটাল পণ্যের ব্যবহার আরো বাড়বে। পুরনো প্রযুক্তি বাদ দিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে যেতে হবে। তাই ডিজিটাল বর্জ্য কমানো যাবে না। ডিজিটাল বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ডিজিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নজির স্থাপন করেছে। আমরাও সে পথে চলতে পারি। আসন্ন শিল্প বিপ্লবে ডিজিটাল বর্জ্য থেকে সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই টেকসই উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার, নীতি নির্ধারক মহল ও সংশ্লিষ্ট সকলের সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

লেখক: বিজ্ঞান লেখক ও এমফিল গবেষক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :