হেলিকপ্টারে সরাসরি রোগী নামবে বার্ন ইনস্টিটিউটের ছাদে

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২০, ২১:০৭ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০, ১২:২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

এখন থেকে আগুনে পোড়া রোগীদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দিতে হেলিকপ্টারে করে আনা যাবে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। রোগী বহনকারী হেলিকপ্টার সরাসরি ভবনের ছাদে নির্মিত হেলিপ্যাডে নামতে পারবে। ইতিমধ্যে হেলিপ্যাড নির্মাণের মূল কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই রোগী নিয়ে নামা যাবে হেলিপ্যাডে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেন ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রবিবার সন্ধ্যায় তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সরকারি কোনো হাসপাতালে হেলিপ্যাড অন্য কোথাও নেই। আগেই এটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে। এখন মূল কাজ শেষ। লাইটিংসহ আরও কিছু বিষয় আছে সেগুলো হচ্ছে। আশা করি এই মাসের মধ্য আমরা ট্রায়ালে যেতে পারব।’

২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে দেশের প্রথম বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হয়। যেখানে একসঙ্গে পাঁচ শতাধিক পোড়া রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার সুবিধা রয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন চানখাঁরপুল এলাকায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের পাশে ১৫ তলা ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৫০০ শয্যা, ৫০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং ১২টি অপারেশন থিয়েটার আছে।

ইনস্টিটিউটের তিনটি ব্লকে রয়েছে বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট এবং অ্যাকাডেমিক ভবন।

এই ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেনই যে এ ধরনের একটি চিকিৎসা ও শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক সামন্ত লালের চেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১০০ ও পরে ৩০০ হয়।

এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে সহিংসতায় দগ্ধ অসংখ্য রোগীকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হয়। সে সময় এই ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনায় আসে। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। এক দশমিক ৭৬ একর জমিতে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ হয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘হেলিপ্যাড নির্মাণের বিষয়টি শুরু থেকেই পরিকল্পনায় ছিল। এটা নির্মাণের কারণ হলো দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন মানুষ আগুনে পুড়ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হচ্ছে, অঙ্গহানি হচ্ছে। সেসব রোগীকে যদি দ্রুত হাসপাতালে আনা যায় তাহলে তাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ জোড়া লাগানো সম্ভব। যদি ছয়ঘণ্টার মধ্যেও আমাদের কাছে আসতে পারে তাহলে হাত-পা কাটতে হয় না। আশা করি হেলিপ্যাড চালু হলে মানুষ উপকৃত হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৪অক্টোবর/বিইউ/ইএস)