আসুন এ বছর আমরা মানুষের ধর্ম পালন করি

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৫৫

ডা. লিটন মল্লিক

আমরা কি এটা ভাবছি? দুর্গাপূজা নিয়ে বাঙালিদের একটা আলাদা সেন্টিমেন্ট আছে, মানি। তবু প্রশ্ন জাগে, পরম সংকটকালেও কি উৎসব পালন এতটাই জরুরি? যুদ্ধ লাগলে কি দেশে পূজা হয়? কেউ মারা গেলে সে বাড়িতে তো সে বছর শাস্ত্রমতে পূজা বন্ধ থাকে জানি।

অথচ আমাদের এত মানুষ মারা গেল, এখনও যাচ্ছে, তবু প্রতিবারের মতো পূজায় ঠাকুর দেখা চাই? ডাক্তারদের জন্য হাততালি বাজাব শুধু, তাদের মৃত্যুকে সম্মান দেখাতে নিজেদের আনন্দে কনামাত্র ছাড় দেব না? এ কেমন সমাজে বাস করছি আমরা?

জর্জ ফ্লয়েডের জন্য সহানুভূতিতে মুখর হয়েছি আমরা, কিন্তু আমাদের শত শত চিকিৎসাকর্মী, সমাজসেবী এবং সাধারণ মানুষের জীবনদানের সমর্থনে কোনো সহানুভূতির বাণী নেই? নাকি আমরা শুধু বাণীতেই প্রতিবাদ জানাই, কাজ করতে চাই না?

আচ্ছা, পারি না সবাই একজোট হয়ে বলতে, চাই না এ বছর মণ্ডপের পূজা, হোক ভার্চুয়াল পূজা? প্রিয়জনকে চোখের দেখাটুকু পর্যন্ত না দেখে শেষ বিদায় জানানোর হৃদয়বিদারক ঘটনা, তাও মেনে নিলাম আর পূজার আনন্দ ছাড়তে পারব না? আপনাদের কারও এমনটা মনে হয় না? কজন বলতে রাজি, এ বছর পূজা বাইরে গিয়ে নয়, ঘরে বসে! এ বছর আনন্দযাপন নয়, শোকযাপন। এ বছর আমরা ব্যতিক্রমী হব। এ বছর আমরা মানুষের ধর্ম পালন করব!

এটুকু করলে অন্যের প্রাণদানের মূল্য যদি নাও দিতে চাই, নিজেদের এতদিন ইঁদুরের মতো ঘরে বসে কাটানোরও একটা মানে হবে, একটা ভবিষ্যৎ থাকবে। নইলে সব বৃথা হয়ে যাবে!

লাইক চাই না, দেখি কজন সহমত হয়ে নিজেদের ওয়ালে এটা পোস্ট করেন। কজন বাস্তবে এমনটা মেনে নিতে প্রস্তুত। দেখি কজন বাঙালি এখনও মানুষ হয়ে বেঁচে আছেন !

লেখক: চিকিৎসক

ঢাকাটাইমস/৭অক্টোবর/এসকেএস