নারায়ণগঞ্জে শিশু হত্যা মামলায় একজনের মৃতুদণ্ডের আদেশ

নারায়ণগঞ্জে শিশু আকিব হোসেন হত্যা মামলায় রতন (২৬) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহিন উদ্দিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রতন কুমিল্লার মেঘনা থানার মির্জানগর এলাকার বাসিন্দা। তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার রাজ্জাক মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর বিকালে বন্দর উপজেলার একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার ট্রলার চালক জামাল হোসেনের পাঁচ বছরের ছেলে আকিব হোসেন বাড়ির সামনের রাস্তায় খেলা করার পর সে আর বাড়ি ফেরেনি। তাকে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ওইদিন সন্ধ্যার পর ওই শিশুর বাবা জামালের মোবাইলে একটি কল আসে। কল করে জানানো হয় আকিবকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে আকিবকে হত্যা করা হবে বলেও জানানো হয়। পরে শিশুর পরিবার জানতে পারে অপহরণকারী একই এলাকার প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া রতন। এরপর শিশুটির আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফতুল্লার পশ্চিম মাসদাইর এলাকা থেকে রতনকে আটক করা হয়। পরে তাকে র‌্যাব-১১’র অফিসে নিয়ে যায় তারা।

এরপর জিজ্ঞাসাবাদে রতন জানান, আকিব ফতুল্লার মুসলিমনগর আদর্শপাড়ার জাহাঙ্গীরের কাছে রয়েছে। তখন র‌্যাব জাহাঙ্গীরকেও গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের ফতুল্লা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আর ফতুল্লা থানা থেকে আসামিদের বন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় শিশুর বাবা জামাল হোসেন বন্দর থানায় মামলা করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, অপহরণের চার দিন পর মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে আকিবকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ব্লেড দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে বন্দর জাকির শাহের মাজারের পেছনে একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

পরে পুলিশকে আসামি রতনকে আদালতে পাঠায়। রতন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়।

নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতের পিপি রকিব উদ্দিন নিশ্চিত করে বলেন, আদালত রায়ে রতনকে অপহরণের একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। একইসঙ্গে মুক্তিপণ দাবির আরেকটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এছাড়া আদালত রায়ে শিশু আকিবকে হত্যার অভিযোগে আরেকটি ধারায় রতনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ আদায় করে বাদীকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। নয়জনের স্বাক্ষর গ্রহণ শেষে এ রায় দেওয়া হয়।

রায়ের পর আদালপাড়ায় উপস্থিত শিশু আকিবের মা- বাবা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়। আসামিকে দ্রুত ফাঁসি দিয়ে দেশবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হোক, অপরাধ করে কেউ পাড় পায় না। আর আমাদেরর মত কারো বুক যেন খালি না হয়।’

(ঢাকাটাইমস/৭অক্টোবর/পিএল)