এসএম সুলতানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৪৩

নড়াইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী (১০ অক্টোবর) শনিবার। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে শিল্পীর কবরস্থানে কোরআনখানি, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। করোনার কারণে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজন থাকছে।

১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রামে তাকে শায়িত করা হয়।

চিত্রা নদীপাড়ের লাল মিয়া গণমানুষের এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৮ সালে ভর্তি হন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে। স্কুলের অবসরে রাজমিস্ত্রি বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতেন শেখ মোহাম্মদ সুলতান। এ সময়ে ছবি আঁকার হাতেখড়ি তার। সুলতানের আঁকা সেই সব ছবি স্থানীয় জমিদারদের দৃষ্টি আর্কষণ হয়।  

নড়াইলের জমিদার ব্যারিস্টার ধীরেন রায়ের আমন্ত্রণে ১৯৩৩ সালে রাজনীতিক ও জমিদার শ্যামাপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায় ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শনে গেলে তার একটি প্রতিকৃতি (পোট্রেট) আঁকেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সুলতান। মুগ্ধ হন শ্যামাপ্রাসাদসহ অন্যরা। লেখাপড়া ছেড়ে ১৯৩৮ সালে কলকাতায় গিয়ে ছবি আঁকা ও জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। সে সময় চিত্র সমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে তার পরিচয় হয়। সোহরাওয়ার্দীর সুপারিশে অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ১৯৪১ সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান সুলতান। ১৯৪৩ মতান্তরে ’৪৪ সালে আর্ট স্কুল ত্যাগ করে ঘুরে বেড়ান এখানে-সেখানে। এরপর জীবনের নানা চরাই-উৎরাই পেরিয়ে এবং সংগ্রামীজীবনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গেছেন।

সুলতানের শিল্পকর্মের বিষয় ছিল বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি, কামার, কুমার, মাঠ, নদী, হাওর, বাঁওড়, জঙ্গল, সবুজ প্রান্তর ইত্যাদি। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশি বাজাতে পটু ছিলেন।

পুষতেন সাপ, ভল্লুক, বানর, খরগোশ, মদনটাক, ময়না, গিনিপিক, মুনিয়া, ষাঁড়সহ বিভিন্ন প্রাণি।

চিত্রশিল্পের খ্যাতি হিসেবে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ১৯৮২ সালে একুশে পদকসহ ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা।

(ঢাকাটাইমস/৯অক্টোবর/এলএ)