অমিত্রের ঘোর
সেই-যে অবিরাম হাঁটার কসরৎ শুরু হল
তারপর থেকে আর থামা-থামি নেই,
গন্ধম নিষিদ্ধ জেনেও
নিওটনের আপেলের আকর্ষণের মতো
মন ঘুর-ঘুর করে সেই গন্ধমকে ঘিরেই ।
দুঃস্বপ্নে হাঁটার মতো
সে হাঁটায় পথ ফুরায় না,
যতো বার উঠি
ততোবার হাঁটু ভেঙে পড়ে যাই
পুণ্যাত্মা দুলালের দরদি দুলদুল
কিংবা তৃতীয় রিচার্ডের শ্বেত অশ্বের মতো।
মায়াবী হরিণী
মায়ার মন্ত্রে টেনে নিয়ে যায় জানি,
কিন্তু সে জানার জমিন ঊষর-অনুর্বর
ফলায় না মানবার ফসল;
তাই আরো জোর, জোর কদমে ছুটি
পিছে ফেলে ভীতির ভ্রুকুটি
শ্রান্ত-দেহে ধারণ করি প্রাণান্ত বল
সে ছোটায় শরীরের অস্থি হয় জল।
কতটা পথ পাড়ি দিলে মিলে মঞ্জিলে মকসুদ!
আসলের কাঁধে ভর করে
পতিতার রঙচটা লিপস্টিক ঠোঁটে
হাসতে হাসতে ঘরে এসে ধরা দেবে
কত অঙ্কের লাভ কিংবা সুদ!
সেই নিকাষের নিকুচি করেছি কতবার
পারদের গুরুভারের মতো প্রতিজ্ঞা করেছি বার বার;
‘শ্রান্তির নোনা জলে সাঁতার কাটবো না আর ।
শ্রান্তির নোনা জলে সাঁতার কাটবো না আর ।
সাঁতার কাটবো না আর,
কাটবো না আর।’
কিন্তু প্রবৃত্তি মনসার দোসর
আজ্ঞাবহ সুতানালি সাপ;
সংকল্পের লৌহ বাসরে
সঙ্গোপনে ঢুকে পড়ে কূটকৌশলে
প্রতিজ্ঞার অকাল প্রাণ বধ করে
বিষাক্ত ছোবলে।
বিভ্রান্তির জটলায় আমার অঘোর অচেতন ঘুম
তমসার ঘোরে ঘোরে ঘেরাটোপে বিভ্রমের ওম
আচমকা মর্মে বাজে;
‘আসসালাতু খায়রুম মিনান নাউম।’
যদিও ক্লিষ্ট রাত কক্ষনো দেখেনি কাঙ্ক্ষার ভোর;
তবুও ছাড়তে পারিনি বেজন্মা কসরতের
মাত্রাহীন অমিত্রের ঘোর।