বিএসইসির সেমিনারে বক্তারা

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাঠামোগত সমস্যা নেই

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০২০, ১৯:২২ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০, ২০:২৫

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক , ঢাকাটাইমস
  • পুঁজিবাজারে স্পেশাল ফান্ড প্রয়োজন
  • মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতটি শেয়ারবাজারের মেরুদন্ডে পরিণত হবে

মিউচুয়াল ফান্ড সেক্টরের কাঠামোগত বা আইনগত কোন সমস্যা নেই। আসল সমস্যা শেয়ারবাজারের দীর্ঘমেয়াদী মন্দা। দেশের মিউচুয়াল ফান্ডের কাঠামো ভারত ও আমেরিকা থেকেও শক্তিশালী। দীর্ঘমেয়াদে বাজার নিুমূূখী হলে লভ্যাংশ দিতে পারেন না মিউচুয়াল ফান্ডস। শেয়ার বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অভাব রয়েছে। এজন্য পুজিবাজারে স্পেশাল ফান্ড প্রয়োজন। আর আগামিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতটি শেয়ারবাজারের মেরুদন্ডে পরিণত হবে।
‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ) এর আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। শনিবার (১০ অক্টোবর) এএএমসিএমএফ ‘শেয়ারবাজার ও দেশের অর্থনীতিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের গুরুত্ব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। আর সভাপতিত্ব করেন এএএমসিএমএফ এর সভাপতি ড. হাসান ইমাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাফিজ আল তারিক। অনুষ্ঠান মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন অরুনাষ্ণু দত্ত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের এমডি ও সিইও খান আসাদুল ইসলাম রিপন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, আগামিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতটি শেয়ারবাজারের মেরুদন্ডে পরিণত হবে। এছাড়া আগামি ৫ বছরের মধ্যে বাজার মূলধনের ২০ শতাংশ হবে এই খাতের। যা বাস্তবায়নে আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের মন্দাবস্থা অন্যদেশের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী ছিল। দেশের মিউচুয়াল ফান্ডগুলো ২০০১ সালের একটি আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
ড. হাসান ইমাম বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে কাঠামোগত সমস্যা আছে বলে অনেকে বলেছেন। অথচ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাঠামোতে কোন সমস্যা নাই। বাংলাদেশ এবং ভারত, আমেরিকা ও ইউরোপের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাঠামোতে কোন পার্থক্য নেই। বরং ভারত ও আমেরিকা থেকে আমাদের ট্রাস্টি রুলস অনেক কঠিন। আসলে আমাদের দেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড আইনে বড় কোনো সমস্যাও নেই এবং বড় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নেই। এটা আন্তর্জাতিক বেস্ট প্রাকটিস ফলো করে তৈরি করা হয়েছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে শেয়ার হিসেবে ভুল ধারণা থেকে বেশ কিছু ইমেজ সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। নেতিবাচক মন্তব্য মিউচুয়াল ফান্ড সেক্টর সর্ম্পকে বিরুপ ধারনা তৈরী করেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যা ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
তিনি বলেন, এই ফান্ডের ইউনিট দর সম্পদ বিবেচনায় হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের বাজারে আরেকটি দর নির্ধারন হয়। যাতে করে ১০ টাকার সম্পদের একটি ইউনিট ৪ টাকায়ও লেনদেন হয়। অথচ ওই ইউনিটের সম্পদ ১০ টাকাই রয়েছে। তারপরেও দরপতনের কারনে অনেকের ধারনা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন মার্কেট যদি ভাল হয় অবশ্যই মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো রিটার্ন দেবে। জুন মাসে আমাদের ফান্ডগুলোর ইউনিট প্রতি সম্পদ ১০ টাকার নিচে ৭ টাকায় চলে গিয়েছিল। কিন্তু এখন সবগুলো ১১ টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে এবং কয়েক মাসেই ৪% থেকে ৫% লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা ফেরত পেয়েছে। বাজার ভাল থাকলে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ডিভিডেন্ড দিতে পারবে ভাল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী মন্দাবস্থার কারণেই মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ও এনএভিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কারণ বেশিরভাগ ফান্ডেরই তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনা রয়েছে। এই কোম্পানির দর বাড়া-কমার কারণেই এনএভি কমেছে।


ঢাকাটাইমস/ ১০ অক্টোবর/ আরএ