‘লোকজন চেনে কম পরিচয় দিতে লাগে ৩০ মিনিট’

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৫১ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাজারে পণ্যের দামে কারসাজি নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ প্রতিযোগিতা রক্ষা করতে গঠিত ‘প্রতিযোগিতা কমিশন’ সম্পর্কে লোকজনের তেমন একটা ধারনা না থাকায় আক্ষেপ ঝরেছে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপারসনের কণ্ঠে।

কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিতকরণ শীর্ষক রবিবার এক কর্মশালায় চেয়ারপারসন মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘অনেকেই প্রতিযোগিতা কমিশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান আছে সেটি জানেনই না। এমনকি সাংবাদিকদের অনেকেও কমিশনের কাজ সম্পর্কে তেমন খোঁজখবর রাখেন না।

‘এভাবে বর্তমানে প্রতিযোগিতা কমিশন চলছে। এমনকি অনেক সময় কোথাও কোথাও আমার নিজের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় দিতেও ৩০ মিনিট সময় লাগে’─ যোগ করেন কমিশন চেয়ারপারসন।

ডেভলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ঢাকার ইস্কাটনে প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সম্পর্কে তুলে ধরেন চেয়ারপরসন মফিজুল ইসলাম।

প্রায় আট বছর আগে প্রতিযোগিতা কমিশন আইন হয়। আর ২০১৬ সালে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। তবে যেসকল লক্ষ্য নিয়ে কমিশন গড়ে তোলা হয় তা পূরণ দূরের কথা এখনও প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের গোছানোর কাজই শেষ করতে পারেনি। জনবল সংকট আর প্রচারনার অভাবে এ প্রতিষ্ঠানটির কাজ সম্পর্কে অবগত নন।

এ বিষয়টি একপ্রকার মেনে নিয়েই মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘সুস্থ বাজার প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে কমিশন নানা ধরণের কাজ করে যাচ্ছে। ‍দুটি সোর্স থেকে তথ্য নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্য দিলেও আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এছাড়া সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের ভিত্তিতেও ব্যবস্থা নিয়ে আইন প্রয়োগ করি।’

উদাহরণ দিয়ে তিনি সম্প্রতি পেঁয়াজ ও চালের দাম নিয়ে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা রুখতে প্রতিযোগিতা কমিশন যে মাঠে নেমেছে সেবিষয়েও অবহিত করেন সাংবাদিকদের।

বাজারে সু্স্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কমিশন কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে চেয়ারপার্সন মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘কিন্তু আমাদের জনবল সংকট আছে। লোকবল নিয়োগ প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এছাড়া প্রচার-প্রচারনা বাড়ানোর জন্য কাজ চলছে।’

পাঁচ বছর আগে যাত্রা করা এই কমিশন এখন পর‌্যন্ত মাত্র ছয়টি অভিযোগ পেয়েছে জানিয়ে মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অভিযোগই নিষ্পত্তি হয়েছে। জনগন যে কেউ চাইলেই আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তেমন ধারনা না থাকায় মানুষ হয়তো তা করছে না।’

বাজার একটা খেলার মাঠ আর উৎপাদনকারী ও ভোক্তাদের খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করে কমিশন চেয়ারপারসন বলেন, ‘সরকার বাজারের রেফারি। বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা হলে কমিশন আইন প্রয়োগ করবে, সু্স্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সকল ধরণের ব্যবস্থা নেবে।

ভার্চুয়ালি এই কর্মশালার উদ্বোধনকালে বাণিজ্য সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিযোগিতা কমিশনের জনবল বাড়াতে হবে। জনবল নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। আশা রাখি এ কমিশন জনগণের মনে আস্থার জায়গা তৈরি করবে।’

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে কমিশন সদস্য জিএম সালেহ উদ্দিন, মো. আব্দুর রউফ, ড. এ এফ এম মনজুর কাদির, কমিশনের পরামর্শক ব্যারিস্টার মাফরুহা এ মার্ফি,  ডিজেএফবির সভাপতি এফ এইচ এম হুমায়ন কবীর, সহ-সভাপতি হামিদ-উদ-জামান, সাধারণ সম্পাদ আরিফুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুল সাদিক , দপ্তর সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম, প্রচার ও গবেষণা সম্পাদক  সাইদ রিপন , কার্যনির্বাহী সদস্য আবু সায়েম, জহির রায়হান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/জেআর/ডিএম)