ডাক্তার প্রসবের থলি কেটে ফেলায় প্রসূতির মৃত্যু

নেত্রকোনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৫৫ | প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৪৯

নেত্রকোনা শহরের সুনেত্র ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ, অপারেশনের সময় আইরিন পারভীন ঝর্ণা নামের ওই প্রসূতির প্রসবের থলি কেটে ফেলেছেন চিকিৎসক। ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন ঝর্ণা।

মঙ্গলবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক)হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান প্রসূতি আইরিন পারভীন ঝর্ণা। এর আগে গত সোমবার সুনেত্র ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ রায় ঝর্ণার সিজার করেন। দুই কন্যা সন্তানের জননী ঝর্ণা সদর উপজেলার লহ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের আতকা পাড়া গ্রামের নূরে আলম খোকনের স্ত্রী।

ঝর্ণার দেবর মো. আল মাসুদ ও ভগ্নিপতি আব্দুল মান্নান জানান, চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ রায় সিজারের সময় ভুলবশত প্রসবের থলি কেটে ফেলেন। পরে তার ব্লিডিং শুরু হলে আর বন্ধ হচ্ছিল না। পরিস্থিতি বুঝে একবারের পরিবর্তে তিনবার অপারেশন থিয়েটার (ওটি)’তে নেন। পরবর্তীতে রোগীর জরায়ু কেটে ফেলেন। এভাবে জটিলতা বাড়তেই থাকে এবং অবিরত চলতে থাকে ব্লিডিং।

এতে শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে প্রসূতির। অবস্থা বেগতিক বুঝে একপর্যায়ে সোমবার দিনগত রাতে ঝর্ণাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মমেকে নিয়ে যাওয়া হয়। নেত্রকোনা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ঝর্ণার শরীরে পুশ করা হয় ১০ ব্যাগ রক্ত।

এদিকে মমেক হাসপাতালে গিয়ে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। সুনেত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাঠানো লোক রোগীর সাথে থাকা চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সটকে পড়েন। এতে মমেক থেকে চিকিৎসা নিতে বেগ পেতে হয়। মঙ্গলবার সকালে মমেকে চিকিৎসাধীন মারা যান ঝর্ণা।

এবিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম খান জানান, কাগজগুলো রোগীর প্রয়োজন নেই। এগুলো হাসপাতালে রাখতে হয় সেজন্য নিয়ে আসা হয়। তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকেচিকিৎসকের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত চিকিৎসকের মন্তব্য জানতে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সুনেত্র থেকে ঝর্ণাকে রাতে মমেকে পাঠিয়ে দ্রুত অপর একটি হাসপাতালে চলে যান অভিযুক্ত চিকিৎসক। এসময় ওই হাসপাতালে গিয়েও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল কাদের সুজা বলেন, একজন প্রসূতি মায়ের প্রসবকালীন সময়ে একঘণ্টার মধ্যে তিন বার ওটিতে নিয়ে অপারেশন করে মূত্র থলি, জড়ায়ু কেটে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া অন্যায়। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নয়তো এধরণের ঘটনা আরো ঘটবে।

নেত্রকোণা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুর্শেদা খাতুন জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। ঝর্ণার পরিবারের লোকজন অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের হাতে এরআগেও একাধিক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :