তারা গিলে খাচ্ছে ব্ল্যাকহোল!

তথ‌্যপ্রযু‌ক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৪৩

মহাবিশ্বের এমন কিছু তারকা বা নক্ষত্র আছে, যারা এমন শক্তিশালী মহাকর্ষ বল তৈরি করে যে এটি তার কাছাকাছি চলে আসা যেকোন বস্তুকে একেবারে টেনে নিয়ে যায়, হোক তা কোন গ্রহ, ধুমকেতু বা স্পেসক্রাফট, তাই ব্ল্যাকহোল। ব্ল্যাকহোল গিলে নিচ্ছে একটি তারাকে। তারাটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে আলো। এই ঘটনাকে বলে 'টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট'।

সম্প্রতি 'ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি' (ইএসও) থেকে এই মহাজাগতিক বিস্ময় ধরা পড়েছে। সাড়ে ২১ কোটি আলোকবর্ষ দূরের ঘটনা এটি!

আমাদের হিসাবে দূরে, বহুদূরে। কিন্তু মহাকাশের হিসেবে এ কিছুই নয়। এ নেহাতই কাছে! বলা হচ্ছে, পৃথিবীর এত কাছে এই ধরনের ঘটনা টেলিস্কোপে ধরা পড়ার ঘটনা এই প্রথম।

মহাকাশের খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ব্ল্যাকহোল বা ব্ল্যাকহোলের তারা গিলে খাওয়ার মতো ঘটনাগুলো এমনিতে যথেষ্ট বিস্ময় জাগায়।

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের 'রয়্যাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সোসাইটি'র রিসার্চ ফেলো ম্যাট নিকলের গলাতেও শোনা গেল সেই বিস্ময়ের সুর-- হাতের কাছের তারাটিকে গিলে খাচ্ছে কোনও এক ব্ল্যাকহোল, এই ব্যাপারটাই যেন কেমন কল্পবিজ্ঞানের মতো শোনায়! অথচ, 'টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্টে' ঠিক এটাই ঘটে।

কোনও হতভাগ্য তারা যদি ঘুরতে-ঘুরতে কোনও ভয়ঙ্কর বড় ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি চলে যায় তবে সেটির মহাকর্ষের টানে তারাটি খণ্ডে খণ্ডে ভেঙে গিয়ে ব্ল্যাকহোলের পেটে ঢুকে পড়ে। এটা যখন হয় তখন চারিদিকে একটা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রে তৈরি হয়। যা কয়েকমাস ধরে থাকে।

উল্লেখ্য, তারকাদের অস্বাভাবিক আকার, ভর ও ঘনত্ব থাকে, আর এর জন্যে এই সব তারকা থেকে নির্গত আলো বাইরে আসতে পারে না। সহজ ভাষায় বলতে গেলে- যখন একটি তারকার জীবনকাল শেষ হয়ে যায়, সেই মুহূর্তে তার অভিকর্ষ শক্তি এতই প্রবল হয় যে আলো ওখান থেকে বের হতে পারে না। আর এই ঘটনা তখনই ঘটে যখন একটি তারকার জীবনকাল অর্থাৎ তার নির্দিষ্ট জ্বালানি শেষ হয়ে যায়। তারকাটি পরিণত হয় ব্ল্যাকহোলে। এভাবেই একটি ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়।

পর্যবেক্ষক বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা-এই ধরনের ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না। কেননা, পুরো বিষয়টি খুব দ্রুত ঘটে। তারা কোনও কৃষ্ণগহ্বরের কাছে এসে পড়লে সেটি দ্রুত ভেঙে গিয়ে ধুলোকণার মতো অংশে পরিণত হয়ে যায়। এবারে বিজ্ঞানীরা ভাগ্যবান যে, তারা এই বিশেষ মুহূর্তটির সাক্ষী থাকতে পেরেছেন।

কোন ধরনের তারা এ বারের ঘটনাটিতে কৃষ্ণগহ্বরের পেটে ঢুকে গেল। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন তারাটির পদার্থের পরিমাণ প্রায় আমাদের সূর্যের সমান! আর ব্ল্যাকহোলটির পদার্থের পরিমাণ শুনলে আঁতকে উঠবেন। ওটি আমাদের সূর্যের প্রায় দশ লক্ষ গুণ ভারী!

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা