পাখির কিচিরমিচির মনে হলেও পাখি নয়

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০২০, ১৬:২৬

ফরহাদ খান, নড়াইল

চারিদিকে থেমে থেমে পাখির ‘কিচিরমিচির’ শব্দ। তবে এই শব্দ অবিকল পাখির মতো মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে পাখি ডাকাডাকির শব্দ নয়। এই কিচিরমিচির আওয়াজ পাখি ধরার অভিনব কৌশল হিসেবে শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়। যার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে জালে আটকে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ফাঁদ হিসেবে রেকর্ড করা শব্দ ব্যবহার করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইছামতি বিলে প্রতিরাতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করা হচ্ছে। এসব পাখি আবার আশেপাশের এলাকাগুলোকে বিক্রি করছে শিকারিরা। 

তবে গোপন সংবাদে নড়াইলের পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বিষয়টি জানতে পেরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) অভিযানে পাঠান। ডিবি পুলিশের এএসআই আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নৌকাযোগে ইছামতির সুবিশাল বিলে প্রায় দুই ঘণ্টা অভিযান চালায় তারা। তবে বিলের পানিতে ঘনঝোঁপ-ঝাড় ও আগাছা নৌকা চলাচলে ধীরগতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায় বরৈ জানান তারা। এরই মধ্যে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়েন পাখি শিকারিরা। এসময় পাখি শিকারের জাল, শব্দযন্ত্র, শিকারিদের আবাসস্থলসহ বিভিন্ন উপকরণ ধ্বংস করে দেয় পুলিশ এবং জাল থেকে একটি দেশি পাখি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, রাতভর চলে পাখি শিকার। তবে শেষরাতে জালে বেশি পাখি আটকা পড়ে। প্রতিরাতে ৩০ থেকে ৪০টি পাখি শিকারিদের জালে আটকা পড়ে। আকার ও প্রজাতি ভেদে প্রতিটি পাখি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। 

এএসআই আনিসুজ্জামান জানান, নড়াইলের ইছামতি বিলে প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে চার থেকে পাঁচজন শিকারি বর্ষা মৌসুমে জালের ফাঁদ ও ‘কিচিরমিচির’ শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে পাখি শিকার করে আসছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাখি শিকারিরা পালিয়ে গেলেও উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। কেউ যদি আবার পাখি শিকারের চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে এসপি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আমরা পাখির অবাধ বিচরণ সৃষ্টি করতে চাই। পাখি শিকারের মতো অপকর্মে কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/পিএল)