পাথর কোনোভাবেই ভাগ্য ফেরাতে পারে না

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৪৭

মজিব রহমান

পাথর সাধারণত খনিতেই পাওয়া যায়। এগুলো বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের যৌগ। যেমন রুবি মূলত অ্যালুমিনিয়াম এবং ক্রোমিয়ামের সংমিশ্রণে গঠিত একধরনের যৌগ থেকে তৈরি হয়। সাপের মাথায় যে রত্ন পাওয়া যায়, বলা হয় তা হলো এই রুবি। রুবিকে বাংলায় বলে চুনি বা মানিক, পদ্মরাগমণি, রক্তরাগ ইত্যাদি। বাস্তবিক সাপের মাথায় কোনো মণি থাকে না। পাথর এত সুন্দরভাবে খনিতে থাকে না। খনি থেকে উঠানোর পর একে কেটে সুন্দর আকার দেয়া হয়। পোখরাজ পাথরের মধ্যে যে সকল রাসায়নিক উপাদান রয়েছে তা হলো- অ্যালুমিনিয়াম, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, সিলিকন ও ফ্লুয়োরিন। গোমেদের মধ্যে আছে- লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, অক্সিজেন। বৈদূর্যমণি, চন্দ্রকান্তমণি ইত্যাদি পাথর অ্যালুমিনিয়াম যৌগ।

হীরা আবার শুধুমাত্র কার্বণ মানে কয়লা থেকে তৈরি হয়। কয়লার খনিতেই পাওয়া যায় হীরা। উচ্চ চাপ ও তাপ প্রয়োগ করে এখন কৃত্রিমভাবেই হীরা বানানো হচ্ছে। মুক্তা তৈরি হয় ঝিনুকের ভেতরে। ঝিনুকের ভেতরে কোনোভাবে বালুর কণা ঢুকে গেলে প্রদাহ তৈরি হয়। সেই প্রদাহ থেকে রক্ষার জন্যই ঝিনুকের শরীর বালুর চারদিকে একটি আবরণ তৈরি হয় যাতে শরীরে ব্যথা পাওয়া না যায়। এই আবারণ বড় হতে হতে মুক্তার আকার হয়। বর্তমানে কৃত্রিমভাবেই ঝিনুকের মধ্যে বালুর কণা ঢুকিয়ে মুক্তার চাষ করা হচ্ছে। আপনার হাতের মুক্তা হলো ঝিনুকের কষ্টের ফসল। প্রবাল সমুদ্রের নিচে পাওয়া যায়। সেখান থেকে তুলে এনে মোটামুটি একটা আকৃতিতে কাটার পর শুকিয়ে পাথরে রূপ দেয়া হয়। সামুদ্রিক প্রবালরাই তৈরি করে এটি।

জ্যোতিষীরা মানুষের শরীরে গ্রহ-নক্ষত্রের খারাপ প্রভাবের কথা বলেই পাথর গছিয়ে দেয়। আপনার শরীরে সূর্যের যে প্রভাব তা আমার শরীরেও একই সময়ে একই প্রভাব। সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবী প্রাণশূন্য হয়ে পড়বে। সবার জন্যই এক। কিন্তু ওরা মওকা বুঝে আপনাকে বলবে- আপনার ওপর রবির কুপ্রভাব রয়েছে। এটা কাটাতে হলে পাথর লাগবে। আপনি ধনী হলে বলবে- পদ্মরাগমণি বা চুনি মানে রুবি লাগবে আর গরিব হলে বলবে সূর্যকান্তমণি লাগবে। পাথর বিক্রি করাই মূল কথা। সূর্যের সাথে লাল রঙের একটা সম্পর্ক আছে। আপনাকে বিশ্বাসের জগতে ধরে রাখতে এসব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য চন্দ্রের কুপ্রভাবের কথা বলে আপনাকে গছিয়ে দিবে চন্দ্রের মতো সাদা/রুপালি রঙের মুক্তাকে। মুক্তার দামে রয়েছে বিস্তর প্রভেদ।

গরিবদের জন্য রয়েছে চাষের মুক্তা অথবা চন্দ্রকান্তমণি। ওদের জালে ধনী গরিব সব অন্ধবিশ্বাসীই আটকে যায়। রাহুর প্রভাব আরও আজব! হিন্দু ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী রাহু হলো একটা দানবের কর্তিত মুখ। সেটা আকাশে ঘুরে বেড়ায়। যখনই সূর্য বা চন্দ্রকে পেয়ে যায় খপ করে গিলে ফেলে। কিন্তু কাটা মাথা থাকায় তা গলা দিয়ে বেরিয়ে যায় বলে আমরা রক্ষা পাই। আজ বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে- চন্দ্রের আড়ালে পড়ায় সূর্যগ্রহণ হয় আর পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ায় চন্দ্রগ্রহণ হয়। অথচ জ্যোতিষীরা এখনো সেই রাহুর ভয় দেখিয়ে, রাহুর প্রভাবের দোহাই দিয়ে বিক্রি করছে পাথর। রাহুর প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য আপনাকে গছিয়ে দিচ্ছে গোমেদ। ওই দানব অসুরের মাথাবিহীন শরীরটিও নাকি আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছো। তার নামই কেতু! হা! হা! কি হাস্যকর। বিস্ময়কর হলো ওই কেতুর প্রভাবও নাকি আছে মানুষের শরীরে। ওই প্রভাব থেকে বাঁচানোর কথা বলে গছিয়ে দিবে বৈদূর্যমণি পাথর। একেক গ্রহেরও নাকি প্রভাব রয়েছে একেক জনের শরীরে! তার থেকে রক্ষার জন্য গছিয়ে দিচ্ছে পাথর। বুধের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য পান্না, শুক্রের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য হীরা ও শ্বেত প্রবাল, মঙ্গলের প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য রক্ত প্রবাল, বৃহস্পতির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য পোখরাজ, শনির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য নীলা গছিয়ে দিবে। দামের পার্থক্য আছে। গরিবদের জন্য গ্রহের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা রয়েছে।

কত হাস্যকরভাবেই না মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। অথচ মানুষ বুঝতেই পারছে না তাদের কীভাবে মুরগি বানানো হচ্ছে। হাতে পাথর দেখেই বুঝে নিবেন- এই লোকটিকে জ্যোতিষীরা মুরগি বানিয়ে ঠকিয়েছে।

অষ্টধাতুর আংটিতে কি কাজ হয়? অগাধ বিশ্বাসে মানুষ অষ্টধাতুর আংটি পরে। কি কি ধাতু আছে এই আংটিতে? সোনা, রূপা, তামা, রাং, সিসা, পারদ ও লোহা। অনেকে কাসা, পিতল ও ব্রোঞ্জের কথাও বলেন। তবে এ তিনটি মৌলিক ধাতু নয়- তামা, রাং/টিন, সিসা/দস্তার একেক মিশ্রণ। হীরা, রুবি, নীলকান্ত, পান্না, গার্নেট, গোমেদ, মুক্তা (পাথর নয়) ইত্যাদি পাথর বসানো আংটিও অনেকে পরেন। স্রেফ স্বর্ণ বা রূপার আংটি যারা পরেন তারা অবশ্য শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যই পরেন। অষ্টধাতুর আংটির মধ্যে থাকা পারদ ও সিসা মানব শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। অন্য ধাতুগুলোও হাতে ব্যবহার করলে ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার হওয়ার সুযোগ নেই। পাথরেরও কোনো উপকারিতা নেই। কেতু, রাহু বা শনির দোষ বলেও কিছু নেই আর কোনো দোষ কাটানোর ক্ষমতাও নেই পাথরের।

অরুণ কুমার বসাক স্যার যখন পাথর বসানো আংটি পরেন তখন পাথর ব্যবসায়ীদের জন্য সুখ বয়ে আনেন আর বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের জন্য বিড়ম্বনা তৈরি করেন। লিটন দেওয়ান চিশতিরা দেখাতে পারেন- দেখুন দেশের সেরা পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষকও আংটি পরেন। বিজ্ঞানের শিক্ষক হলেই তিনি বিজ্ঞানমনস্ক হবেন তার নিশ্চয়তা থাকে না। যদি কেউ না হন তবে ক্ষতি অনেক। মৌলবাদী চক্র তাকে ব্যবহার করে বিজ্ঞানমনস্কতার বিপক্ষে মতাদর্শ গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন।

অরুণ কুমার বসাক একজন বিশিষ্ট পদার্থ বিজ্ঞানী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বরেণ্য শিক্ষক ছিলেন এবং এখনো পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ইমেরিটাস প্রফেসর। তাঁর ডান হাতের দিকে তাকিয়ে দেখুন- তর্জুনী, মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠা আঙুলে চারটি আংটি। তিনি শুধু শোভা বর্ধনের জন্যই এগুলো ব্যবহার করেন তা নয়, একটি বিশ্বাস থেকেই করেন। আংটি পরলে নাকি তাঁর আত্মা শান্তিতে থাকে! আর কুখ্যাত প্রতারক মোহাম্মদ সাহেদের হাতেও ধাতুর আংটি দেখুন। তিনি হয়তো মনে করেছিলেন, পাথর/ধাতুর আংটি পরে যত অপকর্মই করি না কেন, কেউ ছুঁতেও পারবে না। হায়! সাহেদ এখন জেলখানায়।

মানুষের শরীরে রয়েছে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার, লৌহ, তামা, দস্তা, বোরণ, সোডিয়াম, ক্লোরিন ইত্যাদি ধাতু। সবচেয়ে বেশি রয়েছে পানি। নারীরা প্রায়ই আয়রনের (লোহা) ঘাটতিতে ভোগেন। ডাক্তাররা তাকে আয়রণ সমৃদ্ধ কচু, কাঁচাকলা ইত্যাদি খেতে বলেন। বিভিন্ন উদ্ভিদে আয়রন যৌগ থাকে সম্পৃক্ত অবস্থায়। সম্পৃক্ত আয়রনই মানব দেহে কাজে লাগে। আয়রন ট্যাবলেটও খেতে দেন। এর পরিবর্তে যদি লোহার গুঁড়া কেউ খায় তবে সে মহা বিপদে পড়বে। বেশি খেলে মৃত্যুই ডেকে আনবে। কিন্তু যদি লোহার আংটি পরে তাহলে ওই লোহা তার কোনো কাজেই আসবে না। আংটি ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এতে অধিক ক্ষতিকর ধাতুগুলো মানবদেহে সামান্য হলেও ক্ষতি করবে। আবার হাতের যেকোনো আংটিই হয়ে থাকে জীবাণুর বাসা। ঠিকমতো ধুয়ে না রাখলে আংটির জীবাণু শরীরে ঢুকে ক্ষতি করবে। আর সরাসরি শরীরে কোনো ধাতু প্রবেশ করলে তাও ক্ষতিকর। সুশিক্ষিত ও সচেতন মানুষ কারও হাতে অষ্টধাতুর আংটি দেখলেই বুঝে নিবে লোকটি অসচেতন ও অন্ধবিশ্বাসী। অর্থাৎ অষ্টধাতুর আংটির কেবল ক্ষতিই আছে, কোনো উপকারিতা নেই।

পাথরে কি ভাগ্য ফেরে? এক বন্ধু বললেন, পাথরে আসলেই ভাগ্য ফিরে! তবে সবার না! রঙিন-উজ্জ্বল পাথরকে আমরা শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যই ব্যবহার করি না, মূল ব্যবহারটা আধ্যাত্মিক কারণে। হাজার হাজার বছর ধরে এই পাথরের ওপর বিশ্বাস রেখে আসলে কিছু প্রতারকের প্রতারণার শিকার হয়ে মানুষ পাথর ব্যবহার করে আসছে। পাথর কোনোভাবেই ভাগ্য ফেরাতে পারে না। গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করার ক্ষমতা পাথরের নেই। গ্রহ-নক্ষত্রের ভালো-খারাপ প্রভাব বলতেও আসলে কিছু নেই।

আর প্রেমে সফলতা, রোগ নিরাময়, চাকরি লাভ, বশিকরণ, কর্মে উন্নতি, স্বাস্থ্য উন্নতি, দুঃসময় থেকে মুক্তিলাভ, লটারি লাভ, পরীক্ষায় ভালো করা, পারিবারিক কলহ দূর, মানসিক শান্তি লাভ, ব্যবসায় উন্নতি ইত্যাদি কারণে মানুষ পাথর ব্যবহার করে। বিশেষ করে রাজনৈতিক শক্তি অর্জন করে প্রতিপক্ষকে জব্দ করা ও ব্যবসায়/চাকরিতে সাফল্য লাভের প্রত্যাশাটাই বেশি। তবে এখনো অসভ্য মানুষেরা রত্নপাথরকে শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ব্যবহার করে আর কথিত সভ্য মানুষেরা পাথরকে আধ্যাত্মিক কারণে ব্যবহার করে।

মুক্তা ভিন্ন রকমের পাথর। ঝিনুকের ভেতরে বালুকণা ঢুকলে তার যন্ত্রণা থেকে রক্ষার জন্য কণাটির চারদিকে একটি আবরণ তৈরি হয়। এটা বাড়তে বাড়তে গোলাকার মুক্তায় পরিণত হয়। সেই মুক্তা কেন মানুষের সৌভাগ্য বয়ে আনবে? প্রবাল, পান্না, হীরা, গোমেদ, নীলা, রুবি, পোখরাজ ইত্যাদি পাথর জনপ্রিয় ও মূল্যবান। জ্যোতিষরা পাথর ব্যবহারের জন্য কিছু উদাহরণ দেন। আইনস্টাইনের ই = এমসি স্কয়ার সূত্রও গিলিয়ে দেন।

কত শক্তি, কত তেজ পাথরের। সামান্য একটি বৈদ্যুতিক বাল্বের আলোতে যদি সারা ঘর আলোকিত হতে পারে, তবে পাথরে কেন আপনাকে আলোকিত করতে পারবে না? সত্যিই হাস্যকর যুক্তি। পান্না ব্যবহার করলে নাকি সুনাম-যশ-খ্যাতি বেড়ে যাবে। একজন মাদকাসক্তের হাতে দিলে তার কি সুনাম বাড়বে? একজন রিকশাচালকের হাতে দিলে তার কি যশ বাড়বে? প্রবাল থেকেই তো তৈরি হয় প্রবাল পাথর।

সাধারণত গাঢ় লাল বর্ণের অস্বচ্ছ পাথর। মরা প্রবাল থেকে তৈরি প্রবাল পাথর কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে আর বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে? হীরা-পান্না-রুবি ইত্যাদি পাথর খনিতে পাওয়া যায়। হীরা তো কয়লা থেকে তৈরি হয়, রুবি হলো এলুমিনিয়াম অক্সাইড। এগুলোর কোনো ক্ষমতাই থাকার সুযোগ নেই মানুষের ভাগ্য ফেরানোর। প্রশ্ন উঠতে পারে, যদি পাথরের কোনো ক্ষমতাই না থাকে তাহলে হাজার হাজার বছর ধরে কেন মানুষ পাথরে বিশ্বাস রাখছে? এই প্রশ্নের উত্তর জটিল নয়। সত্যিই এখনো বহু মানুষই সচেতন হয়ে উঠেনি। এখনো বহু মানুষই জানে না যে, পৃথিবী গোলাকার এবং সেটা আবার নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণায়মান এবং সূর্যের চারদিকে বছরে একবার ঘুরে আসে। পাথর বিশ্বাসও এরকমই এক বিশ্বাস, এক কুসংস্কার যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষকে ঠকিয়ে আসছে। আসলে পাথরে নয়, মানুষকে আসলে ঠকাচ্ছে মানুষই।

ওই বন্ধুর কাছে জানতে চাইলাম, কার কার ভাগ্য ফেরে? তিনি বললেন, ‘একমাত্র রত্নপাথর ব্যবসায়ীরই ভাগ্য ফেরে। রত্নপাথর বিক্রি করেই আজ বাসের হেল্পার লিটন দেওয়ান বহু বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন’। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্বৃত্ত মোহাম্মদ সাহেদের হাত ভরা আংটি দেখি। সে ভেবেছিল এই আংটিই তাকে রক্ষা করবে। তাই সে হয়ে উঠেছিল লাগামছাড়া!

শেষ দর্শন আজমেরি জেমস হাউজের মালিক লিটন দেওয়ান এত মানুষের ভাগ্য বদলে দেন। অথচ তিনিও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। আমরা পদার্থবিদ ড. অরুণ কুমার বসাক স্যারের হাতেও এমন আংটি দেখি। এতে নাকি তাঁর আত্মা তৃপ্তি পায়! অথচ বিজ্ঞান আত্মাই স্বীকার করে না। আরও কিছু বিখ্যাত ব্যক্তি আংটি পরেন, রত্নপাথর ব্যবহার করেন।

বিশেষ করে আমাদের নায়ক-নায়িকারা লিটন দেওয়ানসহ ভণ্ডপীরদের খুবই মান্য করেন। তারা আংটি পরেন। এতে আমাদের সমাজে একটি মতাদর্শ তৈরি হয়েছে যে, আংটি বা রত্নপাথর মানুষের ভাগ্য ফেরায়। তারা বলেন, যদি ভাগ্যই না ফেরায় তবে এত বিখ্যাত মানুষ পাথর ব্যবহার করে কেন? আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এদেশে এখনো প্রায় সকল মানুষই বিজ্ঞানমনস্ক নন। তারা অলৌকিকতার বিশ্বাসটা পান- পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে। সেই ভুলটা আর জীবনে অতিক্রম করতে পারেন না। বাস্তবিক রত্ন পাথর নিছকই একটি সুদৃশ্য পাথরই। কারও ভাগ্য বদলে দেয়ার কোনো ক্ষমতাই তার নেই।

লেখক: সভাপতি, বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ