কবিতা কল্পনা লতা-কে

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২০, ২১:০০ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০, ২১:০৩

ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া

এখন তুমি কোথায় আছো, ভালো আছো কি না জানি না,

আমরা এখানে খুইয়েছি সব ভালো-খারাপের সীমানা।

 ভালো নেই রাবু রাধা ইলিয়ানা কালু শ্যাম শুভ পিটার,

ভালো নেই বাঁশি একতারা ঢোল সেতার তবলা গিটার।

 

সকিনা যদিও সাব্রিনা হলো; গেলো না মাথায়  উকুন,

খোঁপায় গোজা পারুলের প্রেম উকুনেরই দাঁতে খুন।

শৃঙ্গলা নেই,শৃঙ্গল আছে নানান নকশা বাহারে,

হাতে হাত নেই,আছে হাতাহাতি হতাহত সমাচারে।

 

ভালো নেই আর সালেহার মা’র শসা ও পুঁইয়ের মাচা,

ভালো নেই স্যার বেপারি বাড়ির হালিমার হাবু চাচা।

ভালো নেই লালমতি’র বাপের মসলার পান খাওয়া,

অশ্বদিয়ার নতুন বাজারে জনালের দেখা পাওয়া।

 

ভালো নেই গাঁও জোড়পুকুরিয়া ভূঁইয়া বাড়ির মাঠ,

আমান মিয়া’র ‘বিষাদসিন্ধু’ নাটকেরও নেই পাঠ।

ভালো নেই সেই বেগম বুবুর পুরনো দিনের পয়ার,

বাস্তবতার গদ্যের গদা উপরে হয়েছে সওয়ার।

 

ভালো নেই আর কৈয়নি জলার ঝাঁপুয়া গাঁয়ের খেয়া,

ছই-নায়ে চড়ে মামাদের বাড়ি শশৈয়া বেড়াতে যাওয়া।

ভালো নেই বলে কবিতার এখন আত্মমগ্ন বাস,

আমিন কাকার কবিতার খাতা ফেলে সে-দীর্ঘ শ্বাস।

 

ত্রিপদী শেখার আদি-গুরু যিনি আমার খলিল ভাই,

তাঁর দোকানের পুথিরা এখন একজনও ভালো নাই।

পাতিল সাজানো পসরার ভার বারিক ভাইয়ের কাঁধে,

মুণ্ডু কেটেছে সেই কবে যেনো আধুনিক জল্লাদে।

 

সকলের চেনা জলফা চোরাটা রাত শেষে হলে ভোর,

ছেলে-বুড়োদের পেতো সমাদর; রাতে সে যদিও চোর।

আইসক্রিমঅলা শম্ভুর ভালো কিচ্ছু হয়নি পাওয়া,

ভালোর ঘাড়েতে খারাপের ঘা নিত্যই বেপরোয়া।

 

লাল মোরগেরা ভালো নেই, নেই কুক্কুরুতের দায়,

ভোরের নকিবি ইস্তফা দিয়ে  দুপুর অব্দি ঘুমায়।

খোপের আরামে  চলে পায়রার বাকুম-বাকের রেয়াজ,

রোদ্দুর রয়  মুখ ভার করে, আবছায়া যেনো সে-আজ?

 

তোমাকেই সব বলা যায়; তুমি ‘কবিতা কল্পনা লতা’,

না-ও যদি ফেরো তুমি আছো তাতেই আমার সার্থকতা।

এই তল্লাটে ফেরো যদি তবে ফিরো না পুরানো ঘোরে।  

কষ্টই পাবে যদি না-ই ফেরো ভাবনা বদল করে।