ছেলে হত্যায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান রায়হানের মা

সিলেট ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৪৬

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ মারা যাওয়া রায়হান আহমদ হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তার মা সালমা বেগম। পাশাপাশি এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করা হলে হরতাল-সড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে এলাকাবাসী।

রবিবার দুপুরে নিহত রায়হান আহমদের পরিবার ও বৃহত্তর আখালিয়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত রায়হানের মা সালমা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রায়হানের মামাতো ভাই শওকত আহমদ।

নগরীর আখালিয়ার রায়হানের বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘রায়হান হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক সিলেটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্বারকলিপি দেয়া হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে রায়হানের মা সালমা বেগম আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার না করা হলে আখালিয়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে হরতাল, সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে এবং এর দায়ভার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশকে নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সালমা বেগম বলেন, ‘পুরো ঘটনার ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কর্তৃক একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য প্রদান করতে হবে। একই সাথে এসআই আকবরকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের আইজিপির নির্দেশ কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে নিহত রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো, রায়হান হত্যাকাণ্ডে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, হত্যায় জড়িত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর ভূঁইয়াসহ দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, পলাতক এসআই আকবর ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারে আইজিপির নির্দেশ, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে পুর্ণাঙ্গ বক্তব্য প্রদান, নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করলে হরতাল-সড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক।

গত ১১ অক্টোবর ভোররাতে নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদকে পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। এরপর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর এসআই আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর বিকাল থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।

এদিকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান আহমদের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪টি গুরুতর আঘাত ছিল।

ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের দুটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়। মৃত্যুর দুই থেকে চার ঘণ্টা আগে এসব নির্যাতন চালানো হয়।

এছাড়া তার শরীরে চামড়ার নিচ থেকে প্রায় দুই লিটার রক্ত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম।

ফরেনসিক বিভাগ থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এমএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :