রংতুলিতে মূর্ত হচ্ছে দেবীর রূপ

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
| আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২০, ১৫:১৩ | প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০২০, ১৫:০৪

করোনা মহামারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। এ উপলক্ষে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। শিল্পীদের নিপুণ হাতে ইতোমধ্যে মাটির কাজ শেষে চলছে রঙ তুলির কাজ। শিল্পীর রঙতুলির আঁচড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দশভূজা দেবী দুর্গাসহ বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমূর্তি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অশ্বরের বিনাশ কল্পে মা দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন। আগামী ২২-২৬ অক্টোবর পাঁচ দিনব্যাপী এ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এবছর উপজেলায় ৪৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সত্যেন চক্রবর্তী।

তিনি জানান, দুর্গা পূজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দিরগুলোতে চলছে সাজসজ্জার প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ মন্ডপে প্রতিমায় মাটি লাগানোর কাজ প্রায় শেষ। কিছু কিছু মন্দিরে শুরু হয়েছে রঙ তুলির কাজ। স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পীরা এখানে এসে প্রতিমা তৈরি ও রঙতুলির কাজ করছেন।

অন্যদিকে, প্রতিমার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র ঠিক ও তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক-ঢোল, কাঁশি ও বাঁশির কারিগররা।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ভবেশ মালাকার জানান, ছোটবেলা থেকে কাঁদামাটি ও রঙতুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠেছেন তিনি। এখানে তিনি প্রতিমা তৈরি করে থাকেন। প্রতিবছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে সাত সেট প্রতিমা ডেলিভারি দিয়েছেন তিনি। প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। তা আবার বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকায়।

এ বিষয়ে ভাবানীপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত বাদল জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ২৬টি নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমান সরকার তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ও সহযোগিতা করে আসছে।

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেম উদ্দিন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন করার লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্থরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শকদের (এএসআই) বিভিন্ন মন্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সবকটি পূজা মন্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অন্যান্য বছরের চাইতে এবার জোরালো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘আশা করি, এবারের পূজায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।’

তবে এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম বলেন, ‘বৈশিক করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের পূজা একটু ভিন্নভাবে পালিত হবে। আশা করছি, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :