রসুন শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২০, ১৪:২২

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ভোজনরসিক বাঙালিরা রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য মাছ-মাংসসহ বেশিরভাগ রান্নায়ই রসুনের ব্যবহার করে থাকেন। চিকিৎসায় তথা স্বাস্থ্যরক্ষায় রসুন ব্যবহারের প্রচলন আজ থেকে নয়। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে রসুন ব্যবহার হচ্ছে অন্তত ১৫০০ বছর আগে থেকেই। রসুনের সম্পর্কে আবার অনেকের ধারণা এমন যে, এটি খেলে শরীর গরম হয়ে যেতে পারে, যা আমাদের জন্য খারাপ। তাই রসুন খাওয়া কতটা উপকারী, দিনে কতটুকু রসুন খাওয়া উচিত তা জানা দরকার।

প্রথমেই বলতে হয় হৃদযন্ত্র ও রক্তচাপের কথা। দেখা যাচ্ছে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রেখে, হৃদযন্ত্রের গতিবিধি ঠিক রাখে। বিপাকহার ঠিক রাখা, কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণেও রসুনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে রসুনের জুড়ি নেই। কাজেই নিয়মিত রসুন খাওয়া মানে রোগ জীবাণুকে দূরে রাখা। কোলেস্টেরল ছাড়াও এটি নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তে সুগারের মাত্রা। এতে রয়েছে হাই সালফারও। তবে বেশি রান্না করলে রসুনে থাকা অ্যালিসিন নষ্ট হয়ে যায়।

শরীরের টক্সিন বের করতেও সাহায্য করে রসুন। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস আর দুইকোয়া রসুন কুচি গুলে খেলে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় ক্ষতিকর টক্সিন।

আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখার কাজে সাহায্য করে রসুন। তাই মুখে বা ত্বকে নানা র্যাশ, চুলকানি প্রায়শই যদি ব্লাড ইমপিয়োরিটির কারণে হয়, তাহলে প্রতিদিন রসুন খেতে পারেন। রোজ দুইকোয়া রসুনই এর জন্য যথেষ্ট। সকালে এই কাঁচা রসুনের সঙ্গে খেতে হবে প্রচুর পানি।

রসুন খেতে হলে দিনে দুই-তিন কোয়ার বেশি না খাওয়াই ভালো। এর চেয়ে বেশি রসুন খেতে হলে চিকিৎসক এবং ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই জরুরি।

যেকোনো সার্জারি বা অপারেশনের আগে অনেক সময়ে চিকিৎসকেরা রসুন খেতে নিষেধ করেন। ফলে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মতো কাজ করে। সকালে নাস্তার পূর্বে রসুন খেলে এটি আরও কার্যকরীভাবে কাজ করে। তখন রসুন খাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো উন্মুক্ত হয় এবং রসুনের ক্ষমতার কাছে তারা নতিস্বীকার করে। তখন শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসমূহ আর রক্ষা পায় না।

রসুন শরীর গরম রেখে ঠান্ডা লাগার ধাত কমায়। তবে হাঁপানির সমস্যা থাকলে রসুন খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কারণ সে ক্ষত্রে নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন সবচেয়ে ভালো নিয়মিত কাঁচা রসুন খাওয়া। স্যালাডে বা দইয়ে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। সকালেই খেতে হবে এর কোনও মানে নেই, দিনের যে কোনও সময় খেতে পারেন। পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য দু কোয়া রসুনই যথেষ্ট।

রসুন খেলে তা কাঁচা কিংবা অল্প ভেজে নিয়ে খাওয়াই ভাল। রান্নার মশলায় বেটে দেওয়া রসুনে খাবারের স্বাদ বাড়ে ঠিকই, কিন্তু তাতে পুষ্টিগুণ তেমন থাকে না বললেই চলে।

(ঢাকাটাইমস/১৯ অক্টোবর/আরজেড/এজেড)