রাতে ভাঙ্গা ইউএনওর চার গুলিতে কাঁপল এলাকা

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২০, ১৮:১৮ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০, ১৮:৪২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রবিবার রাত সাড়ে ১০টা। হঠাৎ একটি গুলির শব্দ। শব্দটি আসে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্সের ইউএন্ওর বাসভবনের দিক থেকে। এরপর একে একে আরও তিনটি গুলির শব্দ। অজানা আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে এলাকাবাসী। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। গুলির শব্দের উৎসস্থলের দিকে দ্রুত ছুটে যায় পুলিশ্।

ঘটনাস্থল ভাঙার ইউএনও রকিবুর রহমান খানের সরকারি বাসভবনের পুকুরপাড়। পুলিশ গিয়ে জানতে পারে, পুকুরপাড় থেকে শটগানের চারটি গুলি ছোড়েন ইউএনও স্বয়ং। দুই দিন আগে তিনি নতুন একটি শটগান কিনেছিলেন। পুকুরপাড়ে সেটি পরীক্ষা করেন।

ইউএনও রকিবুর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার একটি অস্ত্রের দোকান থেকে শটগানটি কেনেন তিনি। কিন্তু ওই দোকানে অস্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখার জায়গা ছিল না। তাই রবিবার রাতে পুকুরপাড় থেকে চারটি গুলি ছোড়ে অস্ত্রের পরীক্ষা করেন।

এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে এই অস্ত্র পরীক্ষা কি আইনসম্মত হয়েছে? আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও ব্যবহার বিধিমালার ২৫ (ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, অন্যের ভীতি বা বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

ইউএনও দাবি করেন, পুকুরপাড়ে গুলি চালিয়ে অস্ত্রের পরীক্ষা করে তিনি কোনো আইন ভঙ্গ করেননি। নতুন কেনা অস্ত্র পরীক্ষার জন্য পাঁচটি পর্যন্ত গুলি ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমি চারটি গুলি ছুড়েছি পুকুরে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনে দেওয়া আছে, নতুন শটগান কিনলে পরীক্ষা করার জন্য ফাঁকা গুলি ছোড়া যাবে। আমি আইনের বাইরে কিছু করিনি।’

২০১৬ এর ওই বিধিমালার ২৯ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নতুন অস্ত্র ক্রয় ও মেরামতের সময়ে টেস্ট ফায়ারিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি গুলি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪-এর এই নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অস্ত্র কেনার সময় দোকানেই পরীক্ষা করতে হবে। বাড়িতে নিয়ে পরীক্ষা করার সুযোগ নেই।

ইউএনওর গুলি ছোড়ার ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এসআই শওকত হোসেন। তিনি বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গেলেও ইউএনওর সঙ্গে দেখা হয়নি। বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত অস্ত্রধারী আনসার মো. আমিনুর রহমান তাকে জানান, ইউএনও দুই দিন আগে কেনা শটগান থেকে পুকুরপাড়ে চারটি গুলি ছোড়েন।

পরপর চরটি গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন লাইসেন্স করা অস্ত্রের মালিক বলেন, অস্ত্রের দোকানে ফায়ার টেস্টিং করার নির্ধারিত জায়গা থাকে। সেখানেই অস্ত্র পরীক্ষা করতে হয়। তিনি তার অস্ত্র দোকানের নির্ধারিত স্থানে পরীক্ষা করে তবে বাড়ি এনেছেন। বাইরে পরীক্ষা করার কোনো নিয়ম নেই বলেই জানেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/মোআ)