সমাজে ইনসাফের বড় প্রয়োজন

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৪২

মমিনুল ইসলাম

বেইমানের সাথে কাজ করা যায়, বেদ্বীনের সাথে কাজ করা যায়; কিন্তু বেইনসাফীর সাথে কাজ করা যায় না। মানুষ মানে ‘ইনসান’। সত্যিকারের ইনসান হতে গেলে ‘ইনসাফটাই’ বড় বিষয়। কোনো রাষ্ট্রেই ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে না। যদি না ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটা শাসক শ্রেণির জন্য যেমন জরুরি। জনগণের জন্যও জরুরি।

উই ওয়ান্ট জাস্টিস। এই স্লোগান রাজপথের বাতাসেই উড়বে যদি জাস্টিস বেইনসাফী হয়। লুট-খুন-ধর্ষণ এসব পৃথিবীর জন্য নতুন কোনো বিষয় না। নতুন বিষয় হচ্ছে, সবকিছু আবার ‘নতুন করে’ চাইতে হচ্ছে। যার ইনসাফ আছে তার কাছে চাইতে হয় না। যার ইনসাফ নাই তার কাছে চেয়ে কোনো লাভ নাই।

এ দেশের মানুষ ধর্ম-কর্ম করে। পুণ্য অর্জন করে বেহেস্তে যেতে চায়; বেইনসাফী কি বেহেস্তের অনুমতি পাবে? আমি অনেক ধার্মিক লোকের সাথে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি। তাদের সবকিছুই মোটামুটি ঠিক আছে, শুধু ইনসাফের ঘাটতি। তারা সম্পদ করতে পেরেছে কিন্তু সুখী হতে পারছে না। রাষ্ট্রের ইনসাফ প্রমাণিত হয় সুষম বন্টন ব্যবস্থা আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আমরা কী এখন সেই রাষ্ট্রে বাস করছি? ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয় মানবিক বিবেক বোধের চর্চার মাধ্যমে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সে চর্চার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। যে কারণে আমরা শিশুকাল হতেই ইনসাফের সাথে অপরিচিত থেকে বেড়ে উঠি।

বড় হয়ে যত বিদ্যাই অর্জন করি ইনসাফ আমাদের চরিত্রে অনুপস্থিতই থেকে যায়। যে কারণে শাসনে জুলুম ভর করে আদালতে অবিচার হয়। আর সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে প্রতারণাময় হয়ে। বেইনসাফী সমাজ ব্যবস্থায় হতাশার কোনো মূল্য নেই। আফসোসের কোনো দাম নেই। এসব কোনো ফায়সালাও আনে না।

প্রতিদিন নিজেকে একবার জিজ্ঞাসা করুন আপনার ইনসাফ ঠিক আছে তো। যখন যে কাজটি করছেন অন্যের জন্য যা বন্টন করছেন সেটা ইনসাফের সাথে করছেন তো? সবার আগে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করুন পরিবারে। পরিবার ঠিক আছে তো সমাজ ঠিক আছে, রাষ্ট্র ঠিক আছে। এদেশের সব মানুষ কোনো না কোনো ধর্মে বিশ্বাসী। সব ধর্মের সার বক্তব্য একই। ইনসাফ সবার জন্য প্রযোজ্য।

ইনসাফ হচ্ছে পুণ্য, আর তার দরজা বেহেস্তের দিকে খোলা। বেইনসাফ হচ্ছে পাপ, আর তার পথ গেছে জাহান্নামের দরজায়। যারা ক্ষমতাসীন আর যারা ক্ষমতাহীন। বেইনসাফীর পরিণাম সবার একই। এর প্রায়শ্চিত্য সবাইকেই করতে হবে।এর কুফল সবাইকেই ভোগ করতে হবে।

লেখক: শিক্ষক ও নাট্যনির্মাতা

ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/এসকেএস