জাহাঙ্গীরকে ঠেকাতে একাট্টা বিএনপির বিক্ষুব্ধরা!

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০২০, ১২:৩৬ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০, ১২:৫২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে চরম বেকায়দায় রয়েছে বিএনপি। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন না করে প্রার্থী ঘোষণা করায় আরও জটিলতায় পড়েছে দলটি। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক পক্ষ অপর পক্ষের ১৮ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করায় এ আসনের নেতাকর্মীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এর অংশ হিসেবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীরের নির্বাচনী প্রচারণা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষুব্ধ অংশটি।

আগামী শুক্রবার বিএনপির এ প্রার্থী যে এলাকায় নির্বাচনী সমাবেশ করবেন সেখানেই কালো পতাকা মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এতে এই আসনে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে ওই আসনে প্রার্থিতা নিয়ে বিক্ষুব্ধরা দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের পাশাপাশি ডিম নিক্ষেপের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হলেও বিক্ষোভ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং বিক্ষুব্ধরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাড়ু মিছিল, কুশপুতুল দাহ ও নগরজুড়ে পোস্টার সাঁটিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর গুলশান কার্যালয়ে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের বাইরে আগ্রহী দুই প্রার্থী এম কফিল উদ্দিন আহমেদ ও এসএম জাহাঙ্গীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পুরো আসনের বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে কফিলকে মামলা করা থেকে বিরত রাখেন।

এ ছাড়া আগ্রহী সাত প্রার্থী জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে হাইকমান্ডের কাছে লিখিত আবেদনও করেন। পরবর্তীতে এর তদন্তের জন্য যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি তদন্ত রিপোর্টও জমা দেন।

কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীদের বিচার না করে এমনকি বিক্ষুব্ধ নেতাদের সাথে আপসরফা না করে এস এম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ফলে বিচারবঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরদিন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসার সামনে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানায়। এ সময় মির্জা আলমগীর বাসভবনেই ছিলেন।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা মহাসচিবের বাসায় উপর্যুপরি ডিম নিক্ষেপ করে। পরদিনই ভিডিও ফুটেজ দেখে সেখানে থাকা বিএনপি ও অঙ্গদলের ১৮ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে তারা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে তারা।

এদিকে ‘এস এম জাহাঙ্গীর ও তার গুণ্ডাবাহিনীর বিচার ও বহিষ্কার চাই’ শিরোনামে নগরজুড়ে পোস্টার লাগানো হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, জজকোর্ট, বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়, মহানগর কার্যালয় ও কারওয়ানবাজার এলাকায় এসব পোস্টার দেখা গেছে।

বিক্ষুব্ধরা জানান, ১২ সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। ২২ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরু থেকে তারা নির্বাচনী এলাকায় কর্মসূচি পালন করবে। যেখানেই জাহাঙ্গীর সমর্থকরা প্রচারণা চালাবে, সেখানেই কালো পতাকা নিয়ে তারা মিছিল করবে।

গুঞ্জন আছে, একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এম কফিল উদ্দিন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, মহাসচিবের বাসায় ডিম নিক্ষেপ বা পরবর্তী কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই।

ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন আমাদের জন্য একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা মোকাবিলা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করব।

(ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/বিইউ/কেআর)