নেয়ামত ভূঁইয়া'র কবিতা
ধনের দৈন্য মনের দৈন্য
ধনের দৈন্য ঘুচাতেই মানুষ এতোটা যে তৎপর,
ভেবে দেখে না-যে মনের দৈন্য তারচে ভয়ংকর?
ভোগের ভাগাড়ে ধনের যখন পরম চিত্তসুখ,
মনের মাধুরি বিতরণে ত্যাগ বিপরীতে উন্মুখ।
লোভের লাভায় হাবুডুবু খায় ধনের আয়েশি দৈত্য,
এক পাল্লাতে পরিমাপ করে মিথ্যা এবং সত্য।
মনের দৈন্য প্রমত্ত হলে ভর করে ছল-চাতুরি,
ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত করে রাম দা,কিরিচ,হাতুড়ি।
মনের দৈন্যে ভোগে যে অধম মর্মে মর্মে মরে,
ঘুচাতে পারেনা হীনমন্যতা স্যুট টাই যতো পরে।
নগণ্য তার মর্যাদাবোধ; অগ্রগণ্য সম্পদ,
জীবনের চেয়ে তার কাছে বড়ো ক্ষমতার মসনদ।
ধনের দৈন্য দূর হতে পারে কঠোর পরিশ্রমে,
মনের দৈন্য দূর হয় প্রেমে,ত্যাগ আর সংযমে।
ধনের ধনিরা ধন হাতড়ায় দস্যুর মতো রোজ,
ধনের দঙ্গলে পায়না যে তারা মনের মণির খোঁজ।
মুক্তো যেমন সুপ্তিতে থাকে শুক্তির আবরণে,
চায় সে উষ্ণ মমতার ছোঁয়া তার শোভা জাগরণে।
তেমনি প্রীতির উষ্ণতা চায় চেতনা সংগোপনে,
মনের খনির গভীরে যে হিরে;সেই মণি আহরণে।
বিত্ত যদি আহ্লাদে হাসে তা দেখে চিত্ত কাঁদে,
বিত্ত-বিলাসের সুমতি কামনায় হাত তোলে ফরিয়াদে।
বিত্ত এবং চিত্তের যদি হয় মেলবন্ধন,
সে জীবনে হয় সার্থকতার অমূল্য অর্জন।
ধনের লিপ্সা, মনের মর্ম—দুজনের দুই মতি,
বড়ো দুস্কর একই ঘরে থাকা; লক্ষ্মী-সরস্বতী।
নিয়তির ছকে ধন আর মন; দুদেশে বসত করে,
ধনের দৈন্যে মরে না আত্মা; মনের দৈন্যে মরে।