দিনাজপুর পৌর নির্বাচন: সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২০, ১৪:১৫ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর

দিনাজপুরসহ দেশের ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরেই। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা। নির্বাচন উপলক্ষে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছে দিনাজপুরের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চলছে পুরোদমে।

তবে কেন্দ্র থেকে পৌরসভা নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা না এলেও অনেকেই মনোনয়নের আশায় মাঠে সরব হয়েছেন। সম্ভাব্য প্রাার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং মাঠে-ময়দানে আগাম প্রচারে সরব হয়ে উঠেছেন। অনেকেই ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন। মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও চালাচ্ছেন তোড়জোড়।

জানা গেছে, গত নির্বাচনে জেলার ২/৩টি পৌরসভায় জামায়াত প্রাার্থী দিলেও এবার ব্যতিক্রম। এবার পুলিশি হয়রানি আর মামলার কারণে তাদের কেউ মাঠে নামার সাহসই পাচ্ছেন না।

ডিসেম্বরই দিনাজপুর সদর, ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ, বিরামপুর ও হাকিমপুর এই পাঁচটি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছে ইসি’র একটি সূত্র।

দিনাজপুরসহ দেশের ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে সম্প্রতি ইসি’র কমিশন বৈঠক থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অর্থ্যাৎ ৩০ ডিসেম্বর সম্ভাব্য ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করাও হয়েছে। ইভিএমের মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণের চিন্তা করছে ইসি।

তবে চূড়ান্ত তালিকার পরির্বতন আসতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র। এজন্যে ৪০ থেকে ৪৫দিন হাতে রেখে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে।

এর মধ্যে আলোচনায় আছেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ক্রীড়াবিদ মিজানুল রহমান বাবু পাটোয়ারী, সাবেক মেয়র সফিকুল হক ছুটু, পৌর কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান নওশাদ, সাংবাদিক চিত্ত ঘোষ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল। এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান ফয়সাল হাবিব সুমন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজু, আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট সারোয়ার হোসেন বাবুসহ অনেকেই।

বিএনপি’র মেয়র প্রার্থীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন, বর্তমান মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। দ্বিতীয় দফা মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়াও রয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতা শাহীন খান।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টি’র জেলা সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শফি রুবেল এবার মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার দীর্ঘ প্রতিজ্ঞ বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাবেক কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন।

এছাড়া, ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ থেকে ১৫ জন সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিসেম্বরে দিনাজপুর জেলায় পাঁচটি পৌরসভার সম্ভাব্য নির্বাচন এগিয়ে এলেও ১৫০ বছরের বেশি পুরোনো দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, এটি আয়তনে যেমন বড়, তেমনি জেলার রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ হয় এখান থেকে। আবার এই পৌরসভা সিটি করপোরেশন হবে, এমন আলোচনাও চলছে শহরে।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬৯ সালে দিনাজপুর পৌরসভা গঠিত হয়। প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ। এর মধ্যে ভোটার ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৯০ জন। এর মধ্যে ৫৯ হাজার ৬৯৭ জনই নারী। এলাকার সচেতনমহল জানান, এই নারী ভোটাররাই প্রার্থীদের জয়ে বড় ভূমিকা রাখবেন।

জানা গেছে, বিএনপি’র দখলে এই পৌরসভা থাকলেও ২০ অক্টোবর সদর উপজেলার শূন্য পদে ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাংশের প্রার্থী তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম সোহাগ বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। দু’টি গ্রুপে ক্ষমতাসীন দলের দু’জন প্রার্থী থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতেও ৫২ হাজারেরও বেশি ভোট পড়েছে সোহাগের চশমা প্রতীকে।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/পিএল)