ম্যাকরোঁর মানসিক পরীক্ষা প্রয়োজন: এরদোয়ান

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২০, ১২:১৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মহানবী মুহাম্মদ (স.) কে অবমাননার কারণে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফুঁসছে মুসলিমরা। এছাড়া সম্প্রতি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ। এমন অবস্থায় ম্যাকরোঁর মানসিক পরীক্ষা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। খবর এএফপির

শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মুসলমানদের প্রতি ম্যাকরোঁর মনোভাবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, ‘এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধানের বিষয়ে কী বলতে পারেন যিনি ভিন্ন ধর্মগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষের মানুষের প্রতি এমন (বিদ্বেষমূলক) আচরণ করেন। প্রথমত, তার মানসিক পরীক্ষা করা উচিত।’

আগামী ডিসেম্বরে একটি বিল আনতে চায় ম্যাকরোঁ সরকার। যার উদ্দেশ্য হলো-মসজিদে বিদেশি অর্থ আসা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।

সম্প্রতি ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরোঁ বলেন, ‘ধর্ম হিসেবে ইসলাম আজ বিশ্বজুড়ে সংকটে রয়েছে। শুধুমাত্র যে আমাদের দেশেই যে এই ধরনের ঘটনা চোখে পড়ছে তা কিন্তু নয়। তবে আমরা কোনোভাবেই ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে কাউকে আঘাত হানতে দেব না। নতুন করে অভিযান চালিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও পাবলিক সেক্টর থেকে ধর্মকে সরিয়ে দেওয়া হবে। নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য যেসব স্কুল ও মসজিদ বিদেশে থেকে টাকা পায় তাদের ওপর কড়া নজরদারি চলবে।’

তার ওই বক্তব্যের পর মুসলিম বিশ্বের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তার সেই কথার জবাব হিসেবে এরদোয়ান বলেন, ‘ইসলাম সংকটে বলে ম্যাকরোঁ যে শুধু ধর্মকে অশ্রদ্ধা করেছেন তাই নয়, খোলাখুলি উসকানিও দিয়েছেন। ম্যাকরোঁ এসব কথা বলে তার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ইসলামের কাঠামো নিয়ে কথা বলার তিনি কে?’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মাকরোঁ যে সব বিষয়ে কিছুই জানেন না, সেই সব বিষয়ে বলার আগে যেন ভালো করে বিষয়টা জেনে নেন। আমরা চাই তিনি দায়িত্বশীল প্রেসিডেন্টের মতো কাজ করুন। ঔপনিবেশিক গভর্নরের মতো নয়।’

এরদোয়ান প্রশ্ন তোলেন, ‘ম্যাকরোঁ নামক ব্যক্তির ইসলাম এবং মুসলিমদের নিয়ে সমস্যাটা কোথায়?’

এরদোয়ানের এই ধরনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফরাসী প্রেসিডেন্ট অফিসের এক কর্মকর্তা জানান যে, ফ্রান্সে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। অতিরিক্ত মন্তব্য ও অভদ্রতা কোনো পন্থা নয়। এরদোয়ান যেন তার নীতিগত অবস্থান পরিবর্তন করেন, আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। তার এই অবস্থান সবদিক থেকেই বিপদজনক।’

নেটোর দুই সদস্য দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে এই সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব ছাড়াও দুই দেশ নানা ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থানে ছিল। নেটো জোটে এক দেশ আরেক দেশের মিত্র হলেও সিরিয়া ও লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ, নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে ঘিরে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের অবস্থান আলাদা।

ঢাকা টাইমস/২৫অক্টোবর/একে