লোকসানে কালীগঙ্গা পাড়ের রেস্টুরেন্টগুলো

আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৫৮

করোনার প্রভাব পড়েছে মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা এলাকায় কালীগঙ্গা নদীরপাড়ের রেসটুরেন্টগুলাতে। গত কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর মাসখানেক ধরে চালু হলেও রেস্টুরেন্টগুলো অনেকটাই ক্রেতাশূন্য। এতে লোকসানে পড়েছে গত দুই বছরে গড়ে ওঠা চাইনিজ, বাংলা, ইন্ডিয়ান, থাই খাবারের এসব এসব রেস্টুরেন্টের মালিকরা।

সরেজমিনে ওই এলাকার ফুড স্টেশন-১৮০০, ফিফ, গাঙ, চাপকাবাব, ক্যাসেল, জিরো ডিগ্রি, হাঙ্গার পয়েন্ট রেস্টুরেন্টগুলো ঘুরে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। রেস্টুরেন্টগুলোতে নেই আগের মতো ক্রেতাদের ভিড়।

ফুড স্টেশন-১৮০০’র মালিক রুমেদুর রউফ খান রুমেল বলেন, ‘নদীর তীর ঘেঁষে সর্বপ্রথম আমরা চার বন্ধু মিলে ফুড স্টেশন-১৮০০ প্রতিষ্ঠা করি। তারপর কয়েক মাস পরেই আরো বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট গড়ে ওঠে। বেউথা ও আন্ধারমানিক এলাকাটি এখন রেস্টুরেন্ট পাড়া হিসেবে পরিচিত। আমাদের খাবারের মান ও সার্ভিস ভালো হওয়ায় কখনো লোকসানের মুখে পড়তে হয় নি। কিন্তু, করোনার কারণে এখন বিক্রি কমে গেছে। ফলে, জায়গা ভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল, কর্মচারীদের বেতন দেওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। তাছাড়া করোনার ৫/৬ মাস পুরোপুরি রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় আমরা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’

গাঙ রেস্টরেন্টের মালিক সুইট জানান, করোনার কারণে বর্তমানে বিয়ে, জন্মদিন, পার্টিসহ সব ধরণের অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে আমাদের রেস্টুরেন্টগুলো নদীরপাড়ে হওয়ায় প্রতিবছরই বন্যায় ভাঙনের কবলে পড়তে হয়। প্রতিবছরই প্রায় ৫০/৬০ হাজার টাকার মত বাঁশের চ্যাগার, বালির বস্তা ফেলতে হয় রেস্টুরেন্টগুলোর অবকাঠামো ঠিক রাখতে। এদিকে, জিনিসের মূল্যও বেড়েছে। অথচ বিক্রি নেই। অন্যদিকে, কর্মচারীদের বাঁচানোর জন্য রেস্টুরেন্টও খোলা রাখতে হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন লোকসান দেওয়া যাবে। একসময় দেখা যাবে ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাবে।’

ফিফ রেন্টুরেন্টের মালিক রমজান আলী বলেন, ‘বেউথা পাড়ের রেস্টুরেন্টগুলোর অধিকাংশ ক্রেতাই শিক্ষার্থী। তাদের ওপর নির্ভর করেই মূলত এসব রেস্টুরেন্টগুলো গড়ে উঠেছিল। এছাড়া করোনার কারণে পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়ার প্রবণতাও কমেছে। একান্ত বাধ্য না হলে কর্মজীবীরাও রেস্টুরেন্টমুখী হচ্ছেন না। অন্য সময়ের চেয়ে করোনাকালে প্রায় ৬০ ভাগ বিক্রি কমে গেছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘হোটেলের অবস্থা ভালো না। বিক্রি কমে গেছে। এরই মধ্যে বেতনও কিছু কমানো হয়েছে। আগে হোটেলে টিপস পাওয়া যেত, এখন তাও মিলছে না। যে টাকা পাই তা দিয়ে নিজের চলে যায়, কিন্তু পরিবারকে সহযোগিতা করতে অনেক কষ্ট হয়।’

রেস্টুরেন্ট মালিকদের দাবি, ব্যবসা নেই বললেই চলে। অন্যদিকে ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় লাভের মুখ দেখছে না ব্যবসায়ীরা। অনেকেই দোকান ভাড়া দিতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। সরকার সব খাতে প্রণোদনা দিলেও হোটেল ও রেস্তোরা খাতে দেয় নি।

তারা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের দিকে সুনজর দিত, তাহলে ব্যবসার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে নতুন উদ্যোগে শুরু করতে পারতাম।’

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :