কবিতা
শোণিতে পেতেছি শয্যা
টানা এক যুগ কেটে গেছে ক্রুশবিদ্ধ স্বপ্নচারিতার;
এখনো অনিবার হিংসার রাহুগ্রাসি লেলিহান শিখা,
এখনো ভরা যৌবনে ভাটা নেই দাউ দাউ চিতার,
এখনো বুলেটের কারুকাজে লিখা হয় জীবনের যবনিকা।
সুপ্তির মধ্যেই বিলুপ্তি ঘটে যাবে আমার অস্তিত্ব রেখার,
নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে আমার প্রজাতি; ধুয়ে মুছে একদম নাম গন্ধ সাফ-
সে ভাবনার কাটারিতে আত্মাহুতি হয়েছে আমার আমিত্ব পাখার,
অধিকারের ঔদ্ধত্যে কৃত অপরাধ এভাবেই
পেয়ে যাবে রাজন্যের মাফ।
মৃত্যুকে বেদুঈনের খঞ্জরের মতো অহর্নিশ লুকিয়ে রাখি জামার আস্তিনে,
প্রাণ ভোমরাকে জনান্তিকে আগলে রাখি বেহুলা-লখিন্দরের নিশ্ছিদ্র লোহার বাসরে;
তবুও ঘাতকের নাঙ্গা তলোয়ার আমার বাস্তু বানায় কুটিল কফিনে,
কুকীর্তির কতো-যে উদযাপন মডেলের মোড়কে; আত্মাহীন দেহলাস্যে লাগভেগাসের কেলিতে
মদিরাসক্ত জলুসের আপ্লুত আসরে,
ঝলমলে জলসা ঘরে।
প্রণয়ের পরিভাষা; রক্তিম গোলাপ,প্রীতমের গালের টোল, সৌন্দর্য তিলক,
অকূলে সকলি ভেসে গেছে রসাতলে; পৈত্রিক সূত্রে দস্যুর জবর দখল।
মায়ের স্নেহনীড় মমতার আঁচল আর নাকের নোলক সবখানে কুহকি কীলক,
হীরা চুনি পান্নার পর্বত থেকে নেমে আসা সম্মোহনি দুধের নহরের নামে যুগান্ত শিকল।
ধংস রাজ্য রাজপাট, সেরেস্তা, খাজাঞ্চিখানা সব ছত্রখান,
কোন এক দুরন্ত নাবিক হাতে তুলে নিলে কান্ডারির হাল,
জানি, স্বেচ্ছা নির্বাসনের পালা নিশ্চিত হবে অবসান,
উত্তাল রাজপথে আগামীর স্বপ্ন বুনবে বুকের চাতাল।
শোণিতে পেতেছি শয্যা বুলেটি কী ভয়!
আমার মুক্তির আগে হবে না প্রলয়।