মুষ্ঠির চালে দুর্গাপূজার আয়োজন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর ২০২০, ২০:৫৭

ভাতের চাল থেকে এক মুষ্ঠি করে চাল জমিয়ে পূজার আয়োজন করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের একটি গ্রামের নারীরা। উপজেলা বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের মালিপাড়ার ২৪ পরিবারের নারীরা ১৪ বছর ধরে এভাবে পূজার আয়োজন করছেন।

সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটি পুরুষশূন্য। মালিপাড়া বা চুলিপাড়ার পুরুষদের আয়ের একমাত্র পথ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় ঢোল বাজাতে গিয়ে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে মালিপাড়া গ্রামটি। তাই এ পাড়ার মহিলারা ১৪ বছর ধরে মুষ্ঠির চাল জমিয়ে ও সরকারের প্রাপ্ত অনুদান দিয়ে পূজার কার্যাদি সম্পন্ন করেন। ঢাক, ঢোল, তাল সবই বাজাচ্ছেন নারীরা। পূজার আরতি থেকে প্রসাদ বিতরণেও নারীরা। অর্থের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় মণ্ডপের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে চুয়ে পড়া পানি দিয়ে মন্দিরের মেঝে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। সামনের দেওয়াল বা দরজা না থাকায় অরক্ষিত থাকে মন্দিরটি।

মালিপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দিপালী রানী জানান, প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হবে এ পূজায়। এর মধ্যে সরকারের অনুদানের ৫০০ কেজি চাল বিক্রি করে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছি। বাকি টাকা মুষ্ঠির চাল হতে ও প্রাপ্ত অনুদান দিয়ে সমন্বয় করা হবে। পূজার পরেও টাকার ঘাটতি হলে আবারও মুষ্ঠির চাল জমিয়ে তা পূরণ করা হবে।

কমিটির সাধারণ সম্পাদক গীতা রানী জানান, পূরনো মণ্ডপটি মেরামত না করায় বৃষ্টি পড়ে টিনের চালের ফুটো দিয়ে। অর্থের অভাবে সাউন্ড সিস্টেম করতে পারিনি। ফলে এখানকার শিশু কিশোরের পূজার পরিবেশে মন বসছে না। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বিত্তবানদের কাছে মন্দির ঘরটি মেরামতের জন্য আবেদন জানান।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কমিটির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি রাজকুমার পোদ্দার রাজু বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। তিনি পিছিয়েপড়া ওই জনগোষ্ঠীর মন্দিরটিতে সাহায্য দিয়ে উন্নত পরিবেশে পূজা অর্চনা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাবেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, আমাদের বরাদ্দ অপ্রতুল থাকায় ধর্মীয় কাজ করতে হিমশিম পেতে হয়। বরাদ্দ যদি বেশি থাকে, তাহলে কাজ করতে সুবিধা হয়। মন্দিরের বিষয়টি নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি আগামীতে বরাদ্দ এলে মন্দিরটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসিম আহমেদ জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খবর পেয়েছি যে, এখানে নারীরা পূজার আয়োজন করে থাকেন এবং তাদের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :