ভেষজ মৌরি জটিল রোগ থেকে বাঁচায়

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১০:২৮

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মৌরি সুগন্ধদায়ক বর্ষজীবী উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম ফেনিকুলাম ভালগ্যার। প্রাচীনকাল থেকেই মৌরির ব্যবহার মশলা আর মুখশুদ্ধি রূপে হয়ে আসছে। পান সাজাবার সময়েও পানের ভেতর মৌরি দেওয়া হয়। মৌরি স্বাদে মিষ্টি বা মধুর। এই মধুরতা গুণের জন্যেই সংস্কৃত ভাষায় মৌরিকে মধুরী বলা হয়।

আয়ুর্বেদ মতে মৌরি শরীর শীতল রাখে, রুচিকর, শুক্রবর্ধক, মুখদোষ নিবারক, রক্তপিত্ত, জ্বর, পেটের অসুখে, চোখের অসুখে ও শ্লেষ্ম রোগে উপকারী। গোপনাঙ্গ ব্যথা, কোষ্ঠবদ্ধতা (মল না হওয়া), অগ্নিমান্দ্য (খিদে না হওয়া), কৃমি, কাশি, বমি, শূল ও বায়ুনাশ দূর করতে কার্যকরী।

মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করে। খুব সহজেই মুখের যে কোনও গন্ধ দূর করে দেয়। এছাড়াও অন্য কোনও রকম খাবার থেকে সংক্রমণের আশঙ্কাও কমায়।

খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে মৌরি। এছাড়াও দূর হয় কোষ্ঠকাঠিন্য। মৌরির মধ্যে থাকে খাদ্য হজমকারী বেশ কিছু ফাইবার। মৌরি চিবালে যে লালা নির্গত হয় তা যে কোনও খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে।

অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে। আর রেস্তোরাঁতে গেলে ঝাল-মশলা দেওয়া খাবারই বেশি। তাতে যেমন হজমের সমস্যা বাড়ে তেমনই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আসে। এসব সমস্যা এড়াতেই শেষ পাতে মৌরি দেওয়ার প্রচলন ছিল।

পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে মৌরি। ইসবগুলের মধ্যে অন্যতম উপাদান হিসেবে থাকে মৌরি। এমনকী ওষুধের মধ্যেও এর ব্যবহার রয়েছে। যে কারণে স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখেই রেস্তোরাঁতে খাবার শেষে মৌরি পরিবেশন করা হয়।

ক্যানসারের সমস্যাতেও মৌরির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বকের ক্যান্সার এবং বিশেষ করে কোলন ক্যানসার কমাতে সাহায্য করে। এইসব ক্যানসার তৈরিতে যেসব  উপাদান কাজ করে সেগুলোকে ধ্বংস করতে মৌরি সাহায্য করে। দেহে ক্যানসারকে ছড়িয়ে পড়তে দেয় না।

ত্বককে ভালো রাখার ক্ষমতাও মৌরির আছে। নিয়মিত মৌরি খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম, জিঙ্কের মত উপাদান বাড়ে। যেটি শরীরে অক্সিজেনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও ব্রণর সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।

মৌরিতে থাকা একপ্রকার আঁশ কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

মৌরি কৃমিনাশক হিসেবেও কাজ করে।

নিয়মিত মৌরি খেলে হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

খাওয়ার পর মিয়ম করে মৌরি খেলে হজমশক্তি বাড়ে। এছাড়াও দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়।

ওজন কমাতে ও বাতের ব্যথার অর্ব্যর্থ ওষুধ হল মৌরি।

রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হাফ চামচ মৌরি গুঁড়ো এক গ্লাস জলে মিশিয়ে খেলে অনেক উপকারে আসে।

যাদের অ্যাজমা রয়েছে তারা যদি প্রতিদিন মধু আর মৌরি চিবিয়ে খান তাহলে উপকার পাবেন।

যারা ধূমপান ছাড়তে চাইছেন তারা সামান্য ঘি দিয়ে মৌরি ভেজে কৌটাতে ভরে রাখুন। সিগারেট খেতে ইচ্ছে করলেই এক চামচ করে মৌরি ভাজা খান। তাতে নেশা কমবেই।

একচামচ মৌরি ভাজা, এক চামচ চিনি সারা রাত এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে খেয়ে নিন। আমাশয়, গ্যাস এসবের থেকে মুক্তি পাবেন। আর শরীরও ঝরঝরে থাকবে।

মৌরিতে ভিটামিন সি এর মাত্রা খুব ভাল, পাশাপাশি এটিতে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং পটাসিয়ামও রয়েছে। এই সমস্ত উপাদানগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি।

বিশেষত, খাওয়ার পর মুখটা একটু তরতাজা করতে মৌরির কোনও বিকল্প নেই! তবে আপনি কি জানেন, এটি মুখের অন্দরকে তরতাজা করে তোলার পাশাপাশি শরীরকে নানাবিধ জটিল রোগের হাত থেকেও বাঁচায়। এছাড়াও, ত্বকে মৌরি প্রয়োগের মাধ্যমে ব্রণ, স্কিন ড্যামেজ, দাগ এবং রিঙ্কেলস কম করা যায়।

মৌরিতে ভিটামিন সি এর মাত্রা খুব ভাল, পাশাপাশি এটিতে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং পটাসিয়ামও রয়েছে। এই সমস্ত উপাদানগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। দুধের সাথে মৌরি দিয়ে ফুটিয়েও পান করতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে এই দুধ পান করলে অনেক উপকার পাবেন। দুধে মৌরি মিশিয়ে খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা জানকে অবাক হবেন।

দুধে মৌরি মিশিয়ে পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। মৌরিতে অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ায়। দুধের সঙ্গে মৌরি মিশিয়ে খেলে তা আমাদের শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেক্স পাওয়ার বাড়ায় সেক্স পাওয়ার বাড়ায় যৌন জীবনের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পুরুষ এবং মহিলাদের উচিত মৌরি খাওয়া। লো সেক্স ড্রাইভ, অকাল বীর্যপাত এবং দুর্বলতার মতো সমস্যার সমাধান করতে পারে মৌরি। তাই, সেক্স ড্রাইভ উন্নত করতে দুধে মৌরি দিয়ে পান করুন।

শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি করোনা ভাইরাসের লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানির মতো রোগের ক্ষেত্রে মৌরির দুধ পান করা অত্যন্ত উপকারি। তাই, রোজ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মৌরি দিয়ে দুধ পান করুন। এতে হাঁপানির সমস্যা ধীরে ধীরে কমবে।

পিরিয়ডের সমস্যা থেকে স্বস্তি দেয় পিরিয়ডের সমস্যা থেকে স্বস্তি দেয় পিরিয়ডের সময় মেয়েদের প্রচুর অস্বস্তিতে কাটাতে হয়। এক্ষেত্রে দুধের সাথে মৌরি মিশিয়ে পান করলে পিরিয়ড সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এজন্য এক গ্লাস দুধে এক চামচ মৌরি মেশান। এটি ভালো করে ফুটিয়ে তারপর পান করুন।

(ঢাকাটাইমস/২৬ অক্টোবর/আরজেড)