কাফন পরিয়েও দাফন হলো না

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ২১:৫৫ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২০, ২১:৫৬

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নওগাঁর রাণীনগরে কাফনের কাপড় পরিয়ে প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত দাফন করতে পারেননি জহুরুল ইসলাম (৫২) কে। জহুরুলের মৃত্যু নিয়ে নানারকম গুঞ্জন উঠায় অবশেষে সোমবার রাতে রাণীনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার সকালে মর্গে পাঠিয়েছে।

উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের শিবের মাধাইমুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত জহুরুল ইসলাম ওই গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে।

জানা গেছে, রবিবার রাতে জহুরুল স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে এক সাথে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ করেই বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তার স্ত্রী মরিয়ম পরিবারের লোকজনকে ডেকে তুলে রাতেই জহুরুলকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মারা যাবার পর থেকেই তার মৃত্যু নিয়ে নানারকম গুঞ্জন চলতে থাকে।

এদিকে সোমবার বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফন করা হবে বলে সময় নির্ধারণ করা হয়। সকালে গোসল দিয়ে দাফনের জন্য কাফনের কাপড়ও পরানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে লাশ দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের লোকজন। কখনো কথা ওঠে- জহুরুলকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আবার কখনো কথা ওঠে- তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া জহুরুল হার্ড স্টোক করে মারা গেছেন বলে সকাল থেকেই প্রচার চলে। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় জহুরুলের ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার রাণীনগর থানায় ইউডি মামলা করলে রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

জহুরুলের স্ত্রী মরিয়ম বলেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। রাতে ঘুম থেকে ওঠে দেখে রক্ত বমি করছে। এসময় আদমদীঘি হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।

তবে তার স্বামী বিষক্রিয়ায় নাকি অসুস্থতায় মারা গেছেন- তা বলতে পারেননি তিনি।

তিনি দাবি করেন, স্বামী মারা যাবার পর স্বামীর জায়গা-জমির যে অংশ আমি পাব- সেটা ছেলেরা দেবে না। তাই আমার প্রতি নানারকম অভিযোগ তুলে লাশ ময়নাতদন্তে পাঠাচ্ছে।

জহুরুলের ছেলে নুরে আলমের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, শ্বশুর প্রায় ১০-১২ বছর দুবাই ছিলেন। সে সময় যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করেছেন সব টাকা শাশুড়ি কোথায় কি করেছে, তার কোন হিসাব দিতে পারেননি। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর-শাশুড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। আমার শ্বশুরের মৃত্যুকে আমার শাশুড়ি স্বাভাবিক বলে প্রচার করলেও আমাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে। রাতেই শ্বশুরের মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়েছি, তাই লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি জহুরুল হক বলেন, এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। রাতেই লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে- কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/এলএ)