নানান সংঘের মাধ্যমে বানরের পিঠাভাগ উৎসবের প্রস্তুতি চলছে

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৩১

আসিফ আকবর

আমাকে অনেকেই খুব রাগী মনে করে। যদি জিজ্ঞেস করি কে কে রাগতে দেখেছেন তাহলে সাক্ষী পাওয়া মুশকিল। আমার রাগ যে দেখেছে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা হয় সে পেয়েছে, নয় আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি রাগী নই, একটু একরোখা। মাথার ভেতর যেন জ্ন্ম থেকেই সব প্রোগ্রামিং করা আমার। নিজের সিদ্ধান্তের বাইরে জিরো শতাংশও নড়তে চাই না।

আমি বুঝতে পারি অনেক কিছুই। কে হাওয়া দিচ্ছে আর কে ভালোবাসছে, কে সত্য বলছে আর কে সুবিধা নিতেই আমার কাছে এসেছে। আমার জীবন বয়ে চলছে একই ধারায়। সেজো ভাই ওয়ার্ন করেছেন আগেই- তিনি বলেছেন তোমাকে কেউ বুঝবে না, এমনই একটা চরিত্র তুমি। সুতরাং এসব নিয়ে কষ্ট পেও না।

একটা সময় খুব মারপিট করতাম রেগে গেলে। ইন্ডাস্ট্রিতে এই বাজে রেকর্ডটা আমার আছে। যত ভাবি বিনয়ী হবো ততই আমাকে নাড়তে থাকে। এখন আর ক্ষেপি না, শান্ত থাকি আর হাসি। এই সুযোগ পাশে থাকা ভাই-বন্ধুরা মোটামুটি চোটপাট নেন আমার সঙ্গে। বহুবিধ যন্ত্রণায় আগের সময়গুলোতে খুব হাঁপিয়ে উঠতাম। আমার সিদ্ধান্তই সবসময় চূড়ান্ত ছিল। এতে লাভই হয়েছে সবার শুধু অপমানিত হয়েছি আমি।

ইদানীং ফেসবুকেও আর উত্তেজিত পোস্ট দেই না। কোনো ভয় কিংবা আপসরফায় নয়, সবার মতামত শোনার ধৈর্য নিয়ে বসে থাকি। এই যেমন কপিরাইট অফিস, একদিন গিয়েই বুঝেছি এই তৈলাক্ত জায়গাটি আমার নয়। তাদের সাথে চলতে গেলে আবার পুরোনো ফাইল ওপেন হয়ে যাবে, সংঘাতে জড়িয়ে যাব। তাই ভাবলাম সবার কপিরাইট ইস্যু শেষ হলে তারপর আমি যাবো। এত ধৈর্য আমার আছে আমি সেটা জানতামই না।

যাদের সুযোগ দিয়েছি তারা বকছে একদিকে, আরেকপক্ষ কথায় কথায় খোঁটা দেয় কেন তাদের সুযোগ দিলাম। নানান সংঘের মাধ্যমে বানরের পিঠাভাগ উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। অনেক কিছু বলতে গিয়েও আর বলি না। বড়দের সিদ্ধান্তের ওপর সব ছেড়ে দিয়েছি। তারা যখন সফল হবেন তখন ইন্ডাস্ট্রিতে আন্তরিকতা শব্দটা আর থাকবে না। এমনিতেই আপাতত মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ।

মাঝে মাঝে ফেসবুকে হাস্যোজ্জ্বল ছবি দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করছেন হালের কিছু সংগীত নেতা। দেখতে ভালো লাগে, অনেক লাইক দেই। সৃষ্টিশীল সংঘগুলোর ভেতর গুপ্তচর ঢুকে গেছে, পরস্পর নজরদারি চলছে। অনাসৃষ্টি শুরু হলে বড়রা পালিয়ে যাবেন ধ্যেত্তেরি বলে। ইন্ডাস্ট্রির অপ্রয়োজনীয় উৎপাতগুলো অলরেডী ফ্রন্টলাইনে আসা শুরু করেছে।

ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি বলে শান্ত আছি, চুপচাপ নিজের কাজ করছি। মান-অপমানের খেলা শুরু হলো বলে। কোথায় যে হারিয়ে গেল সৃষ্টিশীলতার সেই দিনগুলো জানি না, তবে আর কখনো ফিরে আসবে না এটা জানি। আমি কথা শুনি শান্ত থাকি আর হাসি। ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির মতো মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছি প্রয়োজনের সময় লাভা উদগিরণের জন্য। অবশ্যই ইনসাফ হবে আর সেই সঙ্গে শাস্তি দেয়া হবে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী মোনাফেকদের।

লেখক: কণ্ঠশিল্পী

ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/এসকেএস