কাশ্মিরে জমি কেনা-বেচা, কারখানা ও সেনা ক্যাম্পের অনুমোদন

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৮:১৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এখন থেকে বিতর্কিত অঞ্চল কাশ্মিরে জমি কিনতে পারবেন যেকোনো ভারতীয় নাগরিক। আবার চাইলে সেই জমি পরবর্তীতে বিক্রিও করতে পারবেন।

শুধু তাই নয়, নতুন আইন অনুযায়ী সরকার চাইলেই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কাশ্মিরে শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া সেনাবাহিনী চাইলেই কাশ্মিরের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যেকোনো জায়গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। 

সম্প্রতি অঞ্চলটির ভূমি ক্রয় ও ব্যবহার সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি নতুন আইন পাস করেছে বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি)সরকার।

গেল বছরের আগস্টে কাশ্মিরের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা বাতিল করে অঞ্চলটিকে রাজধানী দিল্লির কতৃত্বে আনে মোদি সরকার। যদিও ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, ‘কাশ্মির পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে এবং বাইরের কোনো নাগরিক এই অঞ্চলে ভূমি কিনতে পারবেন না।’

১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবর কাশ্মিরের শ্রীনগরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আগমন ঘটে। ফলে প্রতিবছরই এই দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে কাশ্মিরের অধিবাসীরা।  

আর ভারত সরকার সেই দিনটিকেই বেছে নিল। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ভূমি ক্রয় ও ব্যবহার সংক্রান্ত আইনগুলো পাস করা হয় এবং ফেডারেল হোম মিনিস্টির পক্ষ থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়। যেখানে ‘অঞ্চলটির স্থায়ী বাসিন্দার’ ধারণাটি মুছে ফেলা হয়েছে। আদেশটি বলছে, ‘এখন থেকে এই অঞ্চলে ভারতীয়রা ভূমি কিনতে পারবেন।’ 

নতুন এই আইনের পক্ষে অঞ্চলটির প্রশাসনিক প্রধান লেফট্যানেন্ট গভর্নর মানোজ সিনহা বলেন, ‘এই আইনের ফলে নতুন নতুন অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠবে। কিন্তু কাশ্মিরের কৃষি ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব পড়বে না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি দৃঢ়কন্ঠে বলতে চাই যে কৃষি জমিগুলো অবশ্যই কৃষকদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। কোন বাইরের লোক সেইসব জমি দখল করতে যাবে না।’ 

শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হিসেবে মানোজ সিনহা উল্লেখ করেন ‘আমরা চাই অন্য সকল দেশের মতো জম্মু এবং কাশ্মির উন্নত হোক। তৈরি হোক কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র।’

এদিকে এই আইনের ফলে নিজেদের অবস্থা নিয়ে সংকিত কাশ্মিরের জনগণ। তারা বলছেন, তাদের অঞ্চলটিকে পরিবর্তন করার জন্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জজিয়া আকবর নামে কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের ভয় দিনদিন বাড়ছে। আমরা জানি না কোনোদিন হয়ত আমাদের নিজস্ব সবকিছু কেড়ে নেওয়া হবে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যেমন আচারণ করা হচ্ছে, ঠিক আমাদের সঙ্গেও একই আচারণ করছে মোদি সরকার।’

ঢাকাটাইমস/২৮ অক্টোবর/এনএইচএস/ইএস