স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় এএসআই রায়হান গ্রেপ্তার

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ২২:২৭

রংপুরে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় বরখাস্তকৃত এএসআই রায়হানুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম এটি নিশ্চিত করেছেন।

একই ঘটনায় অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে দুইজনের জবানবন্দি নেয়া হয়।

এর আগে একই আদালতে ২২ ধারায় নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর জবানবন্দি নেয়া হয়।

স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় সহযোগিতার অপরাধে গ্রেপ্তার সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ও সুরভী আক্তার সমাপ্তিকে মঙ্গলবার আদালতে নেয়া হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে আদালত তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে বুধবার বিকাল ৫টায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে ওই নির্যাতিতা স্কুলছাত্রী গত ২৩ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম কর্তৃক ধর্ষণের কথা জানায়। এর পরদিন ২৪ অক্টোবর আশ্রিতা সুমাইয়া আক্তার মেঘলার বাসায় কিভাবে গণধর্ষণের শিকার হয় সেসব বিস্তারিত ঘটনা আদালতে বর্ণনা করে। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম ২২ ধারায় তার বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন।

পরে একই আদালতে সন্ধ্যায় গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেনকে নিয়ে আসা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালত তাদের ওই জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, আসামিরা ওই ধর্ষণ ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। ঘটনার দিন তাদের সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ও সুরভী আক্তার সমাপ্তি সেখানে খদ্দের হিসেবে ডেকে নেয়। পরে তারা ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে বলে আদালতে জানিয়েছে।

পিবিআই ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার ময়নাকুঠি কচুটারিতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৩ অক্টোবর সকালে ওই ছাত্রীকে বেড়াতে নিয়ে যান রায়হানুল। পরে পূর্বপরিচিত নগরীর বাহারকাছনা ক্যাদারেরপুল এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া সুমাইয়া পারভীন মেঘলার বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।

পরে ওই ছাত্রী রাত ৯টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পুনরায় সুমাইয়া পারভীন মেঘলার বাসায় এসে আশ্রয় চায়। পর দিন ২৪ অক্টোবর শনিবার রাতে ওই বাসায় মেঘলা তার বান্ধবী সুরভী আখতার সমাপ্তির সহযোগিতায় দুইজন যুবককে ডেকে এনে টাকার বিনিময়ে ওই ছাত্রীকে তাদের হাতে তুলে দেয়। সেখানে সে গণধর্ষণের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পরদিন ২৫ অক্টোবর ওই নির্যাতিতা ছাত্রী রায়হানুলকে খুঁজতে শহরে আসে। সেখান থেকে টহল পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ ওই ছাত্রীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা পুলিশকে জানায়।

এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুসহ দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হারাগাছ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ছাত্রীর বাবা। সোমবার মামলাটি হারাগাছ থানা থেকে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।

রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :