ঢাবি শিক্ষকের অভিসন্দর্ভে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০২০, ০৯:১২ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৪৮

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেমের একটি অভিসন্দর্ভে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে একজন গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। ঢাবি কর্তৃপক্ষ অভিযোগের বিষয়টি যাচাইবাছাই করছে বলে জানা গেছে।

মোবাশ্বের মোনেমের ‘দ্য আনটেমড মনস্টার: ইকোনমিক লিবারালাইজেশন অ্যান্ড করাপশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা অভিসন্দর্ভটি ২০০৮ সালে ‘সোসাইটি অ্যান্ড চেঞ্জ’ জার্নালের এপ্রিল-জুন সংখ্যায় ছাপা হয়।

জার্নালটির সম্পাদক লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আকা ফিরোজ। ড. মোবাশ্বের মোনেম বর্তমানে এই বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।

জানা যায়, গবেষণা অভিসন্দর্ভটিতে চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি নজরে আসার পর চলতি বছরে একজন গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বরবার একটি চিঠিও দেন ওই গবেষক।

এই চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি ধরণের ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মোবাশ্বের মোনেমের অভিসন্দর্ভে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ওঠার পর তা জোগাড় করে যাচাই করেছে ঢাকা টাইমস। গবেষণার চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সফটওয়্যার টার্নইটইনের মাধ্যমে অভিসন্দর্ভটি যাচাই করে নিবন্ধের বেশ কিছু অংশ কপি করা বলে দেখা গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেমের সঙ্গে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। আর ‘সোসাইটি অ্যান্ড চেঞ্জ’ সম্পাদক ড. আকা ফিরোজের বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তার বক্তব্যও জানতে পারেনি ঢাকা টাইমস।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কারও কারও অভিসন্দর্ভে চৌর্যবৃত্তি করার অভিযোগ প্রায় ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করার সফটওয়্যারও ব্যবহার শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে। এর আগে চৌর্যবৃত্তি ধরা একটু মুশকিলই ছিলো।

এ ধরনের অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এসেছে, এখনো আসছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ আসে। কিন্তু এটি অত্যন্ত গর্হিত ও অন্যায় কাজ।’

অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, ‘ওই শিক্ষকের চিন্তা করা উচিত নিজের যতটুকু জ্ঞান আছে ততটুকু জাহির করতে হবে। অন্যের জ্ঞান ধার করে পাণ্ডিত্য দেখানোর মধ্যে কোনো স্বার্থকতা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের উচিত এই অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত করে ঘটনা সত্য হলে ব্যবস্থা নেয়া।’

(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/ডিএম)