গ্রেপ্তার হতে পারেন সুশান্তের দুই দিদি?

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১০:১৭

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

তাদের ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আত্মসাৎ করা হয়েছে তার অর্থ। বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর তার চর্চিত বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনেন অভিনেতার পরিবার। পরবর্তীতে মাদক মামলায় রিয়া গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান। তখন তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আর্জিও জানায় সুশান্তের পরিবার।

প্রায় এক মাস হাজতবাসের পর গত ৭ অক্টোবর পাঁচটি বিশেষ শর্তে জামিন পান রিয়া। সম্প্রতি তিনি সুশান্তের দুই দিদির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানিয়েছেন। রিয়ার অভিযোগ, জাল প্রেসক্রিপশন তৈরি করে সুশান্তকে নিষিদ্ধ ওষুধ খাইয়েছিলেন তার দিদিরা। তাই কিছুতেই যেন তারা নিষ্কৃতি না পান। এ জন্য তিনি আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন।

গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার একটি ফ্ল্যাট থেকে সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার আগে ৮ জুন হোয়াটসঅ্যাপে দিদিদের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। সেটির স্ক্রিনশট প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। তাতে দেখা যায়, সুশান্তের মানসিক অবসাদের কথা জানতেন তার পরিবার। সেই অবসাদ কাটানোর জন্য সুশান্তকে লিব্রিয়াম, মেক্সিটো এবং লোনাজেপ নামে তিনটি ওষুধ খেতে বলেছিলেন তার দিদি প্রিয়াঙ্কা।

কিন্তু এই ‍ওষুধগুলো সরাসরি কেনা যায় না। নার্কোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস আইনে সেগুলো নিষিদ্ধ। তাই নিজেই সুশান্তকে একটি প্রেসক্রিপশন পাঠান প্রিয়াঙ্কা। মুম্বাইয়ের একজন অত্যন্ত নামী চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলেও জানান। সুশান্তের সঙ্গে তার দিদিদের ওই কথোপকথনকে হাতিয়ার করেই বান্দ্রা থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রিয়া। জাল প্রেসক্রিপশন তৈরি করে সুশান্তের জন্য ওই ওষুধ জোগাড় করা হয়েছিল বলে তার অভিযোগ।

রিয়ার দায়ের করা সেই এফআইআর যাতে বাতিল করে দেয়া হয়, তা নিয়ে সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুশান্তের দুই দিদি প্রিয়াঙ্কা ও মীতু। আদালতে পিটিশন জমা দেন তারা। তার জবাবে আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে মারফত আদালেত ৩০ পাতার একটি পাল্টা আবেদন জমা দিয়েছেন রিয়া।

ওই আবেদনে রিয়া জানান, দিদির পাঠানো প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে সুশান্ত ওষুধ কিনে খেয়েছিলেন কি না, তা জানা নেই। যদি খেয়ে থাকেন, তাহলে হতে পারে তা থেকেই তার মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং আত্মহত্যার মতো চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হন তিনি। সেক্ষেত্রে সুশান্তের দুই দিদি তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাই তাদের বিরুদ্ধে দায়ের ওই এফআইআর যেন বাতিল না করা হয়।

তরুণ কুমার নামের যে চিকিৎসক সুশান্তের মানসিক অবস্থার কথা না জেনেই তার জন্য ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, তার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রিয়া। তার যুক্তি, ‘মানসিক অবসাদে ভুগছেন যে রোগী, তার মেডিকেল হিস্ট্রি না জেনে কীভাবে ওষুধ লিখে দিলেন ওই চিকিৎসক? চিকিৎসক হিসেবে একবারের জন্যও তার মনে প্রশ্ন জাগল না?’

তবে এ নিয়ে সুশান্তের পরিবারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সুশান্তের দুই দিদির বিরুদ্ধে তদন্ত এগোবে নাকি এফআইআরটি বাতিল করা হবে, আগামী ৪ নভেম্বর বিচারবতি এসএস শিন্ডে এবং এমএস কার্ণিকের ডিভিশন বেঞ্চ সেই সিদ্ধান্ত নেবে। এফআইআর বাতিল না হলে হাতকড়া পড়তে পারে সুশান্তের দুই দিদির হাতে।

ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/এএইচ