শিল্পকলার দেশে এমন নষ্টচিন্তার কার্টুন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে কী করে?

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১২:১২ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১২:১৪

মমিনুল ইসলাম

একটা দেশের প্রেসিডেন্ট কতটা স্টুপিড হলে, কতটা নোংরা মানসিকতার হলে নিজেদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের বিপক্ষে গিয়ে একদল নষ্টচিন্তার উন্মাদের পক্ষ নিতে পারে।

হ্যাঁ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর কথা বলছি। সে সম্প্রতি হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অপমান করে কথা বলেছে। সারা পৃথিবীর মুসলিমরা এর নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছে। একজন মুসলিম হিসেবে আমি ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।

মুহাম্মদ যীশু কৃষ্ণ মুসা বুদ্ধ কনফুসিয়াসরা পৃথিবীর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এবং শ্রদ্ধেয় মহাপুরুষ। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে তাঁদেরকে মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে অনুসরণ করে আসছে; তাঁদেরকে ব্যঙ্গ করে, কটাক্ষ করে, তাঁদের ছোট করে ফেলার কোনো সুযোগ নেই। তাঁরা পৃথিবীর সভ্যতার সর্ববৃহৎ এক একটি প্রতিষ্ঠান। এসব ম্যাক্রো-ফেক্রো ছাগল-পাগলের কোনো মন্তব্যে বা প্রশংসায় তাঁদের ছোট বা বড় হয়ে ওঠার কোনো কারণ নেই।

পৃথিবীতে মাঝেমধ্যেই এরকম গাধা মূর্খ শাসকরা কপাল গুণে ক্ষমতায় বসে পড়ে। দুই-চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হয়ে নিজেকে যীশু মুহাম্মদদের সমকক্ষ ভাবতে চায়। এই অসভ্যরা পুরো মানবজাতিকেই লজ্জায় ফেলে দেয়। ম্যাক্রো কি ফ্রান্সের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে? ফরাসি বিপ্লবের সংবাদ কী ওর কান পর্যন্ত পৌঁছেছে? ফরাসি প্রগতিশীলতা ফরাসি শিল্প সাহিত্য আর মানবতাবোধের উদাহরণ কী ওর পার্টির কেউ কখনো ওর সামনে উপস্থাপন করেছে?
ম্যাক্রো কী জানে বাকস্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়? ও কী জ্যাঁ পল সার্ত্রকে চেনে? ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতাবোধ বিষয়টি সম্পর্কে কী ওর ন্যূনতম জ্ঞান আছে? ম্যাক্রো কী রুশো-ভলতেয়ার-র‌্যাঁবো-পিসারো-কোঁত-ডুর্খীম-সেজানদের সম্পর্কে কিছু জানে? ম্যাক্রো তো মহানবীকে অপমান করেনি। ও তো ফরাসি জাতিকে অপমান করেছে। আমি ফরাসি হলে তো ওর মুখে থুতু দিতাম মূর্খতার কারণে। একটি বিষয় বুঝি না; যে দেশের ভাস্কর্য-শিল্পী আর শিল্পকলার মহৎ সুখ্যাতি পৃথিবীজুড়ে সে দেশে এমন নীচু নষ্টচিন্তার কার্টুন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে কী করে? তার মানে ফরাসিদের চিন্তা-চেতনার অবক্ষয় কী চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে?

মুসলিম বিশ্ব বিক্ষুব্ধ। আমিও বিক্ষুব্ধ। আমিও চাই ফরাসি পণ্য মুসলিমরা পরিত্যাগ করুক। যতদূর জানি ফ্রান্সের অর্থনীতির বড় একটি অংশ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশনির্ভর। ফরাসিরা শত বছর ধরে মুসলিম দেশে পণ্য বিক্রি করে খেয়েপরে আছে। মুসলমানরা হাত গুটিয়ে নিলে ফরাসিদের ক্লাবে রাতভর নাচ আর মদ জুয়ার ক্যাসিনো তো চলবেই না, পেটেও লাথি পড়বে।

পৃথিবীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। কোটি কোটি মানুষ খুন হয়েছে। এই দুই যুদ্ধেরই নাটের গুরু হিসেবে নিকৃষ্ট ভূমিকা রেখেছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের রাজনীতিতে সাধারণত কোনো মানবিক মানুষ পাওয়া যায় না। এই কারণেই সাধারণ ফরাসিরা ফরাসি বিপ্লব ঘটিয়েছিল।

ম্যাক্রো যেহেতু ফ্রান্সে রাজনীতি করে। ওর কাছে সভ্য-ভব্য মানবিক এবং দায়িত্বশীল কিছু আশা করা অরণ্যে রোদন। ফ্রান্সের মুসলিম তথা সাধারণ ভালো মানুষের সাথে আছি। ঘৃণা করি ফ্রান্সের এ মুহূর্তের রাজনীতিকে। নবীজী সম্পর্কে না জেনে না বুঝে অজ্ঞতাবশত যে মূর্খরা কটাক্ষ করে, বিষোদগার করে আল্লাহ তায়ালা তাদের হেদায়েত করুন। ফরাসি পণ্য বর্জন সময়ের সঠিক ডাক।

লেখক: শিক্ষক ও নির্মাতা

ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/এসকেএস