পদ্মচাষ হতে পারে কৃষকদের আয়ের উৎস

মমিনুল ইসলম বাবু, কুড়িগ্রাম
 | প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর ২০২০, ১৬:০৫

নান্দনিক পদ্মফুল শুধু সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, খাদ্য এবং ওষুধি গুণ হিসেবেও পদ্ম আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। একসময় আমাদের দেশে পুকুর কিংবা বিলে-ঝিলে শোভাবর্ধন করে ফুটে থাকতো পদ্ম ফুল। কিন্তু প্রকৃতির বৈরিতা আর দূষণে পদ্মফুল এখন হাতে গোনা কিছু জায়গা ছাড়া চোখে পড়ে না।

পদ্ম সাধারণত শরৎকালে ফোটে। তবে বর্ষাকালেও পদ্মের দেখা পাওয়া যায়। কুড়িগ্রামের দুটি উপজেলায় এই পদ্ম ফুলের সমারোহ দেখা যায়। এর মধ্যে একটি হলো রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের প্রায় ৫’শ একর জমিজুড়ে গড়ে ওঠা চাকিরপশা বিল। এই বিলে সাদা ও গোলাপি পদ্ম ফুলের দেখা মেলে। অন্যটি, রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক নীলের কুঠি গ্রামের পাটাধোয়া বিল। প্রায় ১৫ একর জমির এ বিলে লাল পদ্মের দেখা মেলে। দুটি বিলই পদ্মবিল নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এইসব পদ্ম বাড়তি সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তরের এই জনপদের। এখানে প্রতিবছর পদ্মবিলে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন দর্শণার্থীরা। স্থানীয়রা মনে করছেন, অনাদর-অযত্নে ফুটে থাকা এসব পদ্ম হতে পারে কৃষকদের বাড়তি আয়ের উৎস। জেলায় অর্থনৈতিক শক্তি হতে পারে এসব পদ্ম।

স্থানীয় আমিনুল ইসলাম জানান, নৌকায় ঘুরে এ বিল ও পদ্মের সৌন্দর্য উপভোগ করেন ভ্রমণ পিপাসুরা। আর বর্ষাকালে কোনো কাজ না থাকায় পদ্ম ফুল তুলে বাড়তি আয় করেন অনেকেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুঁজো উৎসবে এই ফুলের বেশি চাহিদা থাকে। পূজারিরা পদ্মফুল সংগ্রহ করে এলাকা থেকে। তবে পদ্মফুলের চাহিদা থাকলেও নেই বাণিজ্যিক চাষাবাদ।

তিনি আরও জানান, বিল থেকে পদ্ম ফুল তুলে বিক্রি হয় ১০০ টাকা হতে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অনাদর-অযত্নে ফুটে থাকা এসব পদ্ম হতে পারে কৃষকদের বাড়তি আয়ের উৎস। সরকারিভাবে পর্যটন এলাকা ঘোষণার এবং মধুর চাহিদা মেটাতে পদ্মফুলে কৃত্রিম উপায়ে মধু চাষ করার দাবি জানান তিনি।

এছাড়াও তিনি কৃষকদের পদ্ম সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ দেবার পাশাপাশি সবজির চাহিদা পূরণ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ জানান।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, জেলার অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে পদ্মফুল বাড়তি ভূমিকা রাখতে পারে। এই পদ্ম বিলটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দি মিঞা বলেন, ‘সুগন্ধি’ বা ‘অ্যারোমা’ হিসেবে প্রসাধনী শিল্পে পদ্ম ব্যবহার করা হচ্ছে। গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, পদ্মের অ্যান্টি অবেসোজেনিক ও অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধি গুণ রয়েছে। আরো রয়েছে ন্যুসিফেরিন, অ্যাপোরফিন ও আরমেপ্যাভিন জাতীয় অ্যালকালয়েড।

(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :