রসুল (সা.) এর জীবনাদর্শ দেখে বিশ্বের অন্য ধর্মের মানুষও মুগ্ধ

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১২:১৮

শুভংকর পাল

পৃথিবীর সকল ধর্ম শান্তির কথা বলে। সকল অশান্তির মূল হোতা আমাদের মধ্যের কিছু অমানুষ। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কাছে তাদের প্রিয়নবী যেমন প্রিয়, তেমনি করে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ ও মানুষের জন্য সুন্দর পৃথিবী গড়ার প্রচেষ্টা দেখে বিশ্বের অন্য ধর্মের মানুষও তাঁর প্রতি  মুগ্ধ।

আর আমি যে রাষ্ট্রে বেড়ে উঠেছি এই রাষ্ট্রে চারটি প্রধান ধর্ম- ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান। ইসলাম ধর্ম হচ্ছে আমার প্রতিবেশী ধর্ম। আমি যে আবহে বেড়ে উঠেছি বা এখনো চলছি এখানে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির সাথে এক হয়ে চলি।

বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা যে ঘটে না তা কিন্তু নয়। কিন্তু তার চেয়েও বড় করে দেখি, আমাদের ভাই-ভাই সম্পর্ক। বন্ধু-বন্ধু সম্পর্ক। এ সম্পর্ক আছে বলেই আমার সোনার বাংলাদেশটা এত সুন্দর।

ফ্রান্সের নিশ্চিত কোনো উদ্দেশ্য আছে জল ঘোলা করার। এজন্য বিশ্বের এত দেশ থেকে প্রতিবাদ হওয়ার পরও তারা তাদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়নি।

বাক-স্বাধীনতা প্রত্যেকের থাকা উচিত। তবে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস যা একজন মানুষকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে আবার এই ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত এলে সে প্রতিবাদী হতে পারে। ঠিক এমন একটি অবস্থানে অন্য ধর্মের প্রতি অন্তত ন্যূনতম শ্রদ্ধাশীল নয় এমন দেশকে উচিত শিক্ষা দেওয়াই যায়।

তবে একথা মাথায় রাখতে হবে আমরা যারা মানবিক মানুষ  এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে সব কিছুর দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে চাই, আমাদের দ্বারা যেন   দেশের মধ্যে কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না হয়।

নবীকরীম (সা.) সম্পর্কে কিছু বিষয় জেনেছি, এই বিষয়টি পড়ার পর আমাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে আচরণ কেমন হওয়া উচিত তার একটা শিক্ষা নিতে পারি।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদিন এক বেদুইন দাঁড়িয়ে মসজিদে প্রস্রাব শুরু করল। উপস্থিত লোকজন দেখে তাকে বাধা দিতে যাচ্ছিল কিন্তু প্রিয়নবী (সা.) তাদের বললেন, ওকে ছেড়ে দাও। ওর প্রস্রাব শেষ হলে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ো।

নিশ্চিতভাবে জেনে রেখো, তোমাদের সহজ ও বিনয়ী আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরতা বা উগ্রতার জন্য পাঠানো হয়নি।  (বোখারি শরিফ: ২২০)

কিন্তু কষ্টের বিষয় এটাই আমাদের দেশে এ ধরনের সাম্প্রতিক সময়ের একটি ঘটনা প্রমাণ করল আমাদের দেশে শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রকৃত মর্ম বুঝছেন না অনেকেই।

আগুনে দগ্ধ মানুষটি যত বড় অন্যায় করুক অন্তত তার বিচার পাবার অধিকার ইসলাম দিয়েছিল।

রসুল (সা.) ভুল শোধরাতে গিয়ে ভুলকারীর সঙ্গে কখনোই অশোভন আচরণ করতেন না; বরং নম্রভাবে তাকে বুঝিয়ে দিতেন। এতে করে ভুলকারী প্রকৃতপক্ষেই লজ্জিত হতো, আর ভবিষ্যতে একই ভুল দ্বিতীয়বার করত না।

আমি আমার দেশ ও দেশের মানুষের শান্তির জন্য চাওয়া-পাওয়াকেই নিজের চাওয়া-পাওয়া হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং করে যাব  সেই সাথে এটুকুই প্রত্যাশা থাকবে আমার দেশে ইসলাম ধর্ম রক্ষার নামে  প্রিয়নবীর নীতি ও আদর্শ দূরে রেখে কোনো মানুষ যেন বিপথগামী না হয়।

লেখক: সাংস্কৃতিককর্মী

ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/এসকেএস