দু-চার দিনের মধ্যেই ভ্যাকসিন আনার চুক্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৭:৪০ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:১০

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ৩১ অক্টোবর

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পেতে দু-চার দিনের মধ্যেই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, যারা ভ্যাকসিন তৈরি করছে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।

শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের গড়পাড়াস্থ শুভ্র সেন্টারে জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদর মাঝে ফুড প্যাকেজ ও হাইজিন প্যাকেট বিতরণকালে মন্ত্রী একথা বলেন।

করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে আনতে বিশ্বের অনেক দেশে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর মধ্যে রাশিয়া দুটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। যদিও তাদের টিকারে কার্যকারিতা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া চীন ও আমেরিকা তাদের টিকা আগামী এক দুমাসের মধ্যে বাজারে আনতে চাচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হালনাগাদ তালিকা বলছে, বিভিন্ন দেশে ১৭৯টি পৃথক টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে ১৪৫টি আছে প্রাথমিক পর্যায়ে এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে ৩৪টি।

যেসব দেশ নিজেরা টিকা উদ্ভাবন বা উৎপাদন করতে পারবে না, তাদের অন্য দেশ থেকে টিকা কিনতে হবে অথবা আন্তর্জাতিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চীন, রাশিয়া, ভারত ছাড়া অন্য দেশ থেকে টিকা আনার সম্ভাব্য বিকল্প পথ খুঁজে দেখছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা পাওয়ার প্রক্রিয়ায়ও বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে।

চীন ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য তারা টিকার ট্রায়ালও শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

চীনা কোম্পানি সিনোভেকের টিকা দেশে পৌঁছালেই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) শুরু করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে টিকা আনতে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সর্বশেষ ভারতের বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বাংলাদেশে তাদের টিকার পরীক্ষা করার আগ্রহ দেখিয়েছে।

অনুষ্ঠানে সবাইকে মাস্ক পরার তাগিদ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মাস্ক ছাড়া কাউকে সেবা না দিতে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, সকলকে মাস্ক পরে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে হবে। কেউ মুখে মাস্ক না পরলে, তিনি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই সেবা পাবেন না।

শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে সকর্ত করে মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। তবে আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের চেয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কম। আমেরিকাতে সোয়া দুই লাখ লোক মৃত্যুবরণ করেছে। আমরা একটি মৃত্যুও চাই না। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আমাদের সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, মানিকগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, মানিকগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেক্রেটারি ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা ইসলামসহ বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

মানিকগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, শিবালয় উপজেলাসহ তিনটি এলাকায় একযোগে এসময় এক হাজার দুস্থ অসহায় পরিবারের মাঝে ফুড প্যাকেট বিতরণ করা হয়।

ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবার/ইএস