২৬ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে র‌্যাব নির্মিত ‘অপারেশন সুন্দরবন’

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৮:৩৯ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৮:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সুন্দরবন জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত নিয়ে র‌্যাবের তৈরি 'অপারেশন সুন্দরবন' সিনেমাটির শুটিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আগামী ২৬ মার্চ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে পারে।
শনিবার বিকালে র‌্যাব সদরদপ্তরে ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি নির্মিত পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'অপারেশন সুন্দরবন'-এর নির্মাণ অগ্রগতি ও সার্বিক বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এসব তথ্য জানান।
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা মোট তিনটি ভাগে চলচ্চিত্রটির শুটিং শেষ করতে যাচ্ছি। আশা করছি স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৬ মার্চে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দিতে পারব। অপারেশন সুন্দরবন কোনো লাভজনক চলচ্চিত্র নয়। সমাজ সংস্কারমূলক চলচ্চিত্র। সুন্দরবনের যেসব দস্যু স্বাভাবিক জীবনে ফেরত এসেছে, তাদের জীবন-যাপনের মান উন্নয়নে চলচ্চিত্র থেকে উপার্জিত মুনাফা ব্যয় করা হবে।’
র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘২০১২ সালের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে র‌্যাব পরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে সুন্দরবনের জলদস্যু দমনের টাস্ক-ফোর্স গঠনের মাধ্যমে জলদস্যু মুক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। লিড এজেন্সি হিসেবে র‌্যাব ২০১২ সাল থেকে সুন্দরবনে জোরালো অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ২৬২ জন জলদস্যু। একের পর এক অভিযানে ফেরারি জীবনের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয় জলদস্যুরা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও র‌্যাবের কর্মতৎপরতায় ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ১ নভেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত সুন্দরবনের ৩২ দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছে।’
সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। সুন্দরবনের এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। অপহরণ ও হত্যা এখন বন্ধ হয়েছে। জেলেদের উপার্জিত অর্থের ভাগ কাউকে দিতে হচ্ছে না। মাওয়ালী, বাওয়ালী, বনজীবী, বন্যপ্রাণী এখন সবাই নিরাপদ। নির্ভয় নির্বিঘ্নে আসছে দর্শনার্থী, পর্যবেক্ষক ও জাহাজ বণিকেরা। সুন্দরবনকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক গতিশীলতার ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।’
সিনেমাটির পরিচালক দীপঙ্কর দীপন বলেন, ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি তৎকালীন র‌্যাব প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ আমাকে বলেন, সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে চাই। এজন্য তিনি আমাকে সরেজমিন পরিদর্শনে পাঠান। দীর্ঘদিন সেখানে থাকার সময় তৎকালীন র‌্যাবে কর্মরত অফিসারদের খোঁজ খবর করি। তাদের কাছ থেকে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত করার বিভিন্ন গল্প ছাড়াও স্থানীয় জেলে, সেখানে বসবাস করা পরিবার ও দস্যুদের মাধ্যমে নির্যাতিত অনেকের সঙ্গে কথা বলি। এরপরই সিনেমাটির কাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে ৩৩ দিনের শুটিং শেষ হয়েছে। সিনেমাটিতে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত আছেন। সিনেমায় অভিনয় করছেন, চিত্রনায়ক রিয়াজ, সিয়াম আহমেদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, রৌশান, নুসরাত ফারিয়া, শতাব্দী ওয়াদুদ, সামিনা বাশারসহ আরও অনেকে। এছাড়া প্রায় ১৩শ আর্টিস্ট সিনেমাটিতে কাজ করছেন। এটি একটি ব্যয়বহুল সিনেমা। এখানে অসাধারণ কিছু দৃশ্যের পাশাপাশি উন্নত কারিগরি ছোঁয়া আছে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়ায় বাঘ, হরিণের সংখ্যা সেখানে বেড়েছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবন-যাপন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/এসএস/জেবি)