বুড়িমারীতে ‘কোরআন অবমাননার’ প্রমাণ পায়নি মানবাধিকার কমিশন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২০, ২২:৩৫ | প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০২০, ২০:০২

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার কোনো প্রমাণ পায়নি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত টিম। শহীদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) হত্যা ও পরে তার লাশ পোড়ানোর ঘটনাটি নিছক গুজব ছড়িয়ে ঘটানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির।

ফাউজুল কবির বলেন, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে এটাই প্রথম, যেখানে একজন ব্যক্তির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন শরীফ অবমাননার কোনো প্রমাণ মেলেনি। সংশ্লিষ্ট কেউই এমন কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। আমরা অনেকের সাথে কথা বলেছি। আরো কথা বলতে হবে।

এরআগে রবিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত টিম। এ সময় বুড়িমারী ডাক বাংলোতে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, জনপ্রতিনিধি, থানার ওসি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও পৃথকভাবে বিভিন্নজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিকেলে ডাকবাংলো থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাবে জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত টিমের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির বলেন, আমরা মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছি। এতে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, মৃত জুয়েল কোরআন অবমাননা করেনি। নিছক গুজব ছড়িয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফাউজুল কবির বলেন, আমরা ঘটনাটি তিনভাগে ভাগ করে তদন্ত করছি। প্রথমত, রংপুর থেকে তারা কেন এবং কোথায় এসেছিল? দ্বিতীয়ত, মসজিদে নামাজের সময় যখন ঘটনা তখন উপস্থিতরা কেন সমাধান করলেন না? তৃতীয়ত, এখানে উপস্থিত জনতাকে কারা বিভ্রান্ত করেছে?

মানবাধিকার কমিশনের এই কর্মকর্তা বলেন, এখনো ঘটনার তদন্ত চলছে। তাই তদন্তের স্বার্থে অনেক কথা বলতে পারছি না। এরপরও বলছি। আমি শনিবার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিহত জুয়েলের সঙ্গী সুলতান রুবাইয়াত আব্বাস ওরফে সুমন জুবায়েরের সাথে কথা বলেছি। পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, ইউএনও, ওসি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ওই মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আরো বলবো। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ গাজী সালাউদ্দিন এবং তদন্ত কমিটির অপর সদস্য ও লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) টিএম রাহসিন কবীর।

গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগে তুলে শহীদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়।

(ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :