নেয়ামত ভূঁইয়ার কবিতা: বিবর্ণ বিবৃতি
মানুষ বেশিতো বাড়িতে দেখিনা জনসংখ্যাই বাড়িতেছে,
গাছের চেয়েও আগাছারা দেখি বেশি কল কাঠি নাড়িতেছে।
দ্রব্যমূল্য বাড়িতেছে তবে মূল্যবোধটা কমিতেছে,
দীক্ষার অভাবে শিক্ষার ভারে হতাশায় প্রাণ দমিতেছে।
যোগ্যতা গেছে রসাতলে আর তেলবাজ পদে বসিতেছে,
নেতার কদর শূন্য-কোঠায়; সিকি নেতা দর কষিতেছে।
জননেতা নেই; আছে অভিনেতা মঞ্চে ও ময়দানে,
খলনায়কের দাপটে সকল নায়কই নির্বাসনে।
চাপার বাজার রমরমা আর জ্ঞানের কদরে ভাটা,
গানের কথার থাকেনা যে মানে; বাজনায় কানফাটা।
রাজনীতিবিদ নেইতো তেমন; রাজনীতিজীবী আছে,
মূল বৃক্ষই মরছে নিত্য; পরগাছা সুখে বাঁচে।
মায়ের চেয়েও মাসির দরদ বেড়েছে অতীব মাত্রায়,
ভাইয়ের চেয়েও শ্যালকের দুঃখে মনটা কষ্টে কাতরায়।
ফুফুরা যে আজ কোথায় হারালো খালামণিদের ভিড়ে,
মামার ধাওয়ায় চাচারা পালায় নাড়ির বাঁধন ছিঁড়ে।
প্রীতির চিতায় নীতির এখন অকাল আত্মাহুতি,
কঞ্চির ঘায়ে অসহায় বাঁশ ভোগে মহাদুর্গতি।
বাঁশ দিয়ে আর হয়না তো বাঁশি; হয় মজবুত লাঠি,
শিষ্টের গালে দুষ্টরা মারে ছেঁড়া পাদুকার চাটি।
নিয়ার বানায় সোনার ফিতায়; পাজামা পাটের ছালায়,
স্টিলের ঢাকনা শোভা পায় দেখি মাটির পাতিলা থালায়।
যুক্তির জোর কমিতেছে আর জোরের যুক্তি বাড়িতেছে,
গাধাদের সাথে কুস্তি খেলায় মেধারা নিত্য হারিতেছে।
মসজিদ যতো হইতেছে পাকা ঈমান সে হারে কাঁচা,
খড়কুটো দিয়ে বানাইছে ঘর; সোনার দণ্ডে মাচা।
বাড়িতেছে হার সাক্ষরতার শিক্ষার মান কমিতেছে,
সনদে সনদে বেকারে বেকারে রাষ্ট্রীয় দায় জমিতেছে।
অজুহাত যতো বাড়িতেছে ততো কর্মের হাত মরিতেছে,
মনের লজ্জা পারে না ঢাকিতে স্যুট-টাই যতো পরিতেছে।