পঞ্চগড়ে প্রকাশ্যে নদী দখল

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২০, ২১:১৩ | প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর ২০২০, ২১:১২

পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রবাহমান তালমা নদীতে বালু ফেলে দখল করছে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। গত কয়েকদিন ধরে শত শত ট্রলি দিয়ে বালু ফেলে নদীটিকে দখল করছে এই কোম্পানি।

এর আগে পাশের হিমালয় বিনোদন পার্ক নামের একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পার্ক নদীটির একটি অংশ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে। ফলে নদীটি প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় প্রবাহমান। নদীটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাবার শঙ্কা দেখা দেয়ায় পরিবেশ এবং কৃষি অর্থনীতির উপর বিরাট প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের পঞ্চগড় জেলার নদ-নদী, খাল বিল ও জলাশয় জলাধার ভিত্তিক অবৈধ দখলদারদের তালিকা অনুসারে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড প্রায় সাড়ে সাত একর নদীর জমি দখল করেছে। বর্তমানে তারা নদীর প্রবাহমান ধারায় বালি ফেলছে। অন্যদিকে হিমালয় বিনোদন পার্ক প্রায় সাড়ে আট একর জমি দখল করেছে।

গত কয়েকদিন থেকে জালাসী এলাকার আব্দুর রহিম বিন্দুর কাছে বালি কিনে নদীতে ফেলছিল সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড। বিন্দু নামে ওই বালু ব্যাবসায়ী জানান, ওই কোম্পানি আমাদের কাছ থেকে বালু কিনে নিচ্ছে। কোম্পানির একজন ম্যানেজার ছিলেন। তিনি বাড়ি চলে গেছেন।

সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি।

তালমা নদীর ওই এলাকায় এলজিইডি একটি রাবার ড্যাম্প স্থাপন করেছে। এই ড্যাম্পের মাধ্যমে খরা মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন আবাদে কেনাল সেচের মাধ্যমে পানি দেয়া হয়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান নদী ভরাট করার ফলে পানিশূণ্য হয়ে পড়েছে তালমা। ফলে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বামন পাড়া এলাকার খতিবুল ইসলাম জানান, অনেকদিন থেকেই প্রশাসনের নাকের ডগায় তালমা দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীটি মরে গেলে এলাকায় কোনো প্রকার কৃষি হবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলা কমিটির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল খায়ের জানান, প্রকাশ্যে তালমা নদীকে হত্যা করা হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আমরা আন্দোলনে যাবো।

এদিকে সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম এবং সদর থানার ওসি আক্কাস আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, নদীর চলমান প্রবাহ বালু ফেলে বন্ধ করা হয়েছে। আমরা নদী ভরাটের কাজ বন্ধ করেছি। একটি তদন্ত রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশন নদী খাল বিলের দখলদার হিসেবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, সদর উপজেলায় ৯২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার ২২ ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২নভেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :