নেয়ামত ভূঁইয়ার কবিতা: লাল টুকটুকে দিন
আঁধারের আল বেয়ে, স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসে
আগুন উপহার নিয়ে মানুষের পরম সখা প্রমিথিউস,
ককেশাস পর্বতে যেদিন সে হয় বাজপাখির খোরাকে শৃঙ্খলিত,
তখনো কি বিশ্বাসঘাতির মদদ পেয়েছিলো দেবতা জিউস?
পুণ্যাত্মা যীশুর জন্যে যেমন জুডাস
জুলিয়াস সিজারের জন্য যেমন ব্রুটাস
নবাব সিরাজের জন্য যেমন মীর জাফর,
এভাবেই ছত্রখান বিশ্বাসের বাস্তুভিটা বেহুলার আস্থার বাসর।
সভ্যতার আকর,উত্তাপের উৎস,আলো উৎসারনের প্রসূতি
অবলীলায় হতে পারতো মর্ত্যের আগুন,
অথচ আলো-উত্তাপ না ছড়িয়ে সর্বগ্রাসী হুতাশনে
সে আগুনে পুড়ে যায় আগামীর ভ্রুণ।
কালের কন্ঠ থেকে সেই সুর ভেসে এসে হৃদয়ের তন্ত্রে তন্ত্রে
মুক্তির মন্ত্র হয়ে লোকালয়ে যতোবার ফোটে,
হালের জঠর থেকে সে সুরের অসুর জন্ম নিয়ে
ততোবার জোট বেঁধে সুবিধার জোটে
ফরমাণ জারি করে বলে,
‘অবাঞ্ছিত এই সুর বড়ো বিদ্ঘুটে।
দেশে দেশে কালে কালে,পুরাণে বা হালে নিয়তি-নিষ্ঠ হয়ে মানবপ্রেমীরা সয়ে যায় নির্মম পীড়ন,
সে ছকেই দেবশ্রেষ্টের অবাধ্য প্রমিথিউসের ঘটেছিলো পবিত্র পতন।
পীড়ক নিধনে চাই জুলফিকার,চাই এক্সক্যালিবার
কিংবা অমন হাতিয়ার;
শান দিয়ে খাপে পুষে রাখে যারে একতার ধার।
এখনো অবিনাশী জান্তব জিউস
আছে তৎপর তার সহযোগী ব্রুটাস জাফর জুডাস,
এখনো আস্থাঘাতি মাঠে মাঠে চক্রান্ত দোক্তার চাষ;
বিদ্যমান বিশ্বাসহন্তা দৈত্যের নিরোধী দাপট,
এখনো খোলেনি সেই আদ্যিকালের জোটবদ্ধ জট।
হালের পাগলা ঘোড়ায় তোমরাই পরাবে জানি
বাগে-আনা লাগাম ও জিন,
ঐক্যের ঐকতানে তোমরাই আনবে আবার লাল টুকটুকে দিন।