সেই ‘নবাবের নাতি’সহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১১:১৬ | প্রকাশিত : ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১০:৫৫

‘নবাবের নাতি’ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ঢাকায় গ্রেপ্তার আলী হাসান আসকারীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলার দ্বিতীয় আসামি আসকারীর শ্যালক রায়হান উদ্দীন জনিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

সোমবার রাতে মামলাটি করেন আসকারীর শ্বশুরপক্ষের আত্মীয় দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নাতি পরিচয় দিয়ে আলী হাসান আসকারী চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখান।

২০১৮ সালের ২৩ মে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নাম করে তিন দফায় ব্যাংক ও ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক আসকারী। এর পর চাকরি দিতে না পারলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নানা টালবাহানা করতে থাকেন। তার সঙ্গে প্রতারণায় অংশ নেন তার স্ত্রী মেরিনা আক্তার হেনা আসকারীসহ আরও কয়েকজন।

এদিতে গত বুধবার রাজধানীর মিরপুর থেকে আসকারীকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম ও হিউম্যান ট্রাফিক টিম।

নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নাতি পরিচয় দিয়ে ভুয়া নবাব আলী হাসান আসকারী বছর তিনেক আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সবুজপাড়ার হাতেম আলীর মেয়ে মেরিনা আক্তার হেনাকে বিয়ে করেন। আলী হাসান আসকারী যখনই চুয়াডাঙ্গায় শ্বশুরবাড়ি আসতেন, তখনই মহল্লায় ফুটিয়ে তুলতেন উৎসবের আমেজ।

মেরিনা আক্তার হেনা মাসখানেক আগে কন্যাসন্তান প্রসব করেন। মেয়েকে দেখতে ওই সময় আলী হাসান আসকারী চুয়াডাঙ্গায় আসেন। এসময় এলাকায় তিনি উন্নতমানের খাবারও বিতরণ করেন। এরপরই গত বুধবার ঢাকায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলে অনেকেরই ভুল ভাঙে।

মাথায় হাত ওঠে দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামের সহিদুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলামের। তিনিও প্রতারিত হয়েছেন। রফিকুল ইসলামের বোনকে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নাম করে তিন দফায় ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আলী হাসান আসকারী।

প্রতারণার শিকার রফিকুল সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেন। তিনি জানান, মেরিনা আক্তার হেনা আমার নিকটাত্মীয়। আমার বোনের চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকি। মেরিনা আক্তার হেনা বলেন, তার স্বামী নবাব পরিবারের ছেলে। দেশের সরকারি সব দপ্তরেই স্বামী আসকারীর হাত রয়েছে। সহজেই চাকরি দিতে পারবে। এর পর আসকারী, হেনা ও হেনার ভাই জনি চাকরির জন্য টাকা দাবি করেন।

স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রথমে ৭ লাখ টাকা নেন আসকারী। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেয়া হয়। পরে দুই দফায় মেরিনা ও জনির হাতে আরও ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়। টাকা নিয়েও চাকরি দিতে না পেরে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকেন তারা। এরই মধ্যে প্রতারণার মামলায় আসকারী ঢাকায় গ্রেপ্তার হলে রফিকুলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেন তিনি। সন্ধ্যায় আসকারীর শ্যালক জনিকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলী হাসান আসকারী তার স্ত্রী মেরিনা আক্তার হেনাকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদে দাঁড় করিয়ে দেন। সেই সময় চুয়াডাঙ্গার জামাই হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান আসকারী।

মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী হেনা হারিকেন মার্কা নিয়ে নির্বাচনে নামলেও ভোট পেয়েছিলেন হাতেগোনা কয়েকটি।

(ঢাকাটাইমস/০৩নভেম্বর/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :