ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দেয়ার মূল কারণ উদারনীতি

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১৫:১২

মজিব রহমান

অনেকের মতো আমারও প্রিয় মানুষদের একজন রিপাবলিকান পার্টির আব্রাহাম লিংকন। তার প্রচেষ্টায় দাসপ্রথার বিলুপ্ত হয়েছে। তারা শুরু করেছিল ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতা করার জন্য। তাদের স্লোগান ছিল ‘মুক্ত শ্রম, মুক্ত দেশ, মুক্ত মানুষ।’ সেই রিপাবলিকানরা কালক্রমে হয়ে উঠে রক্ষণশীল। আধুনিকতা ও মানবতাবিরোধী। তারা খ্রিষ্টধর্মকেই প্রাধান্য দিয়ে, তাদের ধর্মীয় বিষয়কেই প্রাধান্য দিয়ে উদারতার বিপক্ষে গিয়ে আঁকড়ে ধরেছে পশ্চাৎপদতাকে। তাদের কাছে আমেরিকাই আগে। তাদের কাছে সৃষ্টিবাদই অধিক গ্রহণযোগ্য। জর্জ বুশের জঙ্গুলে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায়ই উঠে এসেছে ট্রাম্প।

বিপরীতে বানি স্যান্ডার্সের মতো সমাজতান্ত্রিক মানসিকতার নেতৃত্বও উঠে আসছে ডেমোক্র্যাটদের হাত ধরেই। এ কারণেই বলতে পারি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মতাদর্শে বামঘেঁষা অর্থনীতির প্রতি আগ্রহ রয়েছে। ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে। ধর্মান্ধতার বাইরে গিয়ে তারা গর্ভপাতকেও সমর্থন দিচ্ছে, এমনকি সমর্থন দিচ্ছে সমকামিতাকেও। বিজ্ঞানকে ভিত্তি করেই তারা আগাতে চায়। এসব কারণেই তারা একটি উদারনৈতিক আধুনিক দলে পরিণত হয়েছে। এ কারণেই বারাক ওবামার মতো কালো ও মুসলিম পিতার সন্তানও মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়। মনোনয়ন পায় একজন আধুনিক নারী হিলারীও।

সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে দেখছি, উচ্চশিক্ষিত মুক্তচিন্তকরা সমর্থন দিচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে। বিপরীতে স্বল্প শিক্ষিত ধর্মান্ধরা সমর্থন দিচ্ছে রিপাবলিকদের। আবার দরিদ্র কালরা সমর্থন দিচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের, বিপরীতে শ্বেতাঙ্গ ধনিকশ্রেণি সমর্থন দিচ্ছে রিপাবলিকানদের। অধিকাংশ নারীই ডেমোক্র্যাটদের নিরাপদ মনে করছে। নারীরা বিপুলভাবেই অর্থ সাহায্য দিয়ে সমর্থন দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে আমাদের সমর্থন দেয়ার কোনো মূল্য নেই। ইংল্যান্ডের শ্রমিক দলকে সমর্থন করাও এমনই মানসিক তৃপ্তি। এতে চোখ রাখতে সুবিধা হয়। ক্রিকেট, ফুটবল এমন বহু দিকেই আমাদের সমর্থন থাকে। ব্রাজিল বা রিয়াল মাদ্রিদকে সমর্থন করি একই কারণে। সমর্থনের পেছনে কিছু কারণ থাকে। কিছু বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই আমরা সমর্থন দেই।

একজন ডোনাল্ড ট্রাম্প জীবনভর অপরাধ করেছেন অধিক মাত্রায়। তার হাতে অসংখ্য নারী নিপীড়নের/ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবেও বহু অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তিনি অশ্লীল, লুম্পেন এবং মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত। এটাই আজকের রিপাবলিক। তাদের সমর্থকও থাকবে। বিপরীতে বারাক ওবামা, হিলারী ক্লিনটন বা জো বাইডেনকে অধিক মার্জিত, ভদ্র হিসেবে দেখেছি। এই মতাদর্শেরও একদল সমর্থক থাকে। এসবের মধ্যে আমার নিকট ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দেয়ার মূল কারণ উদারনীতি। খুব করেই চাই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জো বাইডেন জিতে যাক আর পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে বিধ্বস্ত হোক রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প।

লেখক: সভাপতি, বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ

ঢাকাটাইমস/৪নভেম্বর/এসকেএস