ভালো দামে ধামইরহাটের পানচাষিদের হাসি ফুটেছে

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ)
| আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২০, ১৫:৩১ | প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৪৫

পান চাষে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছে নওগাঁর ধামইরহাটের একটি ইউনিয়নের কয়েকশ পরিবার। বর্তমান সময়ে পানের বাজারে চড়া দাম পেয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের পানচাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১৮০ জন পানচাষি বরজ তৈরি করে পান চাষ করছেন। তার মধ্যে পাটনাই জাত পাঁচ হেক্টর, দেশি দুই হেক্টর ও ছাঁচি এক হেক্টর আবাদি জমিতে ১৪ মেট্রিক টন পান চাষ করছেন।

মাঠ পর্যায়ে পান চাষের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৭নং ইসবপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত জোতরাম, মানপুর, চন্দ্রাকোলা, গণেশপুর ও ধনজয়পুর এলাকায় পলি দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি হওয়াই এখানে আট হেক্টর জমিতে পান চাষিরা পান চাষ করছেন। পলি দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি হওয়ার কারণে প্রায় প্রতিটি বাড়ির গেরস্থরা শখের বশে বাড়ির আশপাশে, আবার কেউ কেউ তিন ফসলি জমিতে কম বেশি বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন পানের বরজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পান চাষিরা পানের বরজের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। তবে টানা বৃষ্টি ও বন্যায় এবার অনেকের বরজের পান নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়ায় শাখা নদী যমুনার নাব্য হ্রাস পেয়ে তিন ফসলি কৃষি জমির সঙ্গে মিশে যাওয়ায় বর্ষা বা একটু বৃষ্টিতে দীর্ঘ সময় এ এলাকা বিলে রুপান্তর হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী নদীর বাঁধে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলে এ ইউনিয়নের কয়েক হাজার বিঘা জমিতে সোনার ফসল ফলানো সম্ভব হবে।

তবে বাজারে পানের দাম বৃদ্ধি থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন এমনটাই মনে করছেন অনেক পানচাষি।

জানা গেছে, এলাকায় উৎপাদিত বরজের পান উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার জয়পুরহাট, হিলি ও বর্ডার পেরিয়ে কলকাতার বাজারে যায়। বড় বড় পাইকারদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ব্যবস্থা না গড়ে ওঠায় স্থানীয় পানচাষিরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন হাট-বাজারে পান বিক্রয় করে থাকেন। তবে পাইকারদের নিরাপত্তা ও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এ অঞ্চলের পান দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশের মাটিতেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে এলাকায় বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে বলে অভিমত গ্রামবাসীর।

জোতরাম এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে পানচাষি আলতাফ হোসেন জানান, বাবার সঙ্গে প্রায় ৪০ বছর ধরে পান চাষ করে আসছেন তিনি। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি ২৪ শতাংশ জমিতে দুটি বরজে পান গাছের চারা রোপণ করেছেন। প্রতি বছর তিনি পানের বরজ থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।

এলাকায় কমবেশি সকল পানচাষি খোলা বাজারে প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার পান বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।

এ বিষয়ে ইসবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েশ (বাদল) জানান, চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পানের খুব ভালো দাম রয়েছে। আর সে কারণেই প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা পান চাষে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে শুরু করছে। অন্যদিকে তাদের দেখে অনেক নতুন মুখ পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, পান চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকায় তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও উপজেলা থেকে ভালো পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে। একটি পান বরজ তৈরি থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত সকল কৃষককে কীটনাশক ও রোগবালাই দমনে সুপরামর্শ প্রদান করা হয়। ভবিষ্যতে পান চাষের উপরে আমাদের বৃহৎ কর্মপরিকল্পনাও রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৫নভেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :