তৃতীয় লিঙ্গের জন্য মাদ্রাসা স্থাপন অনন্য উদ্যোগ

মো. রশিদুর রহমান
 | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০২০, ১৭:১৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে মুক্তমঞ্চে একটি গবেষণাধর্মী মঞ্চনাটক দেখেছিলাম। যার নাম ছিল ‘শিখণ্ডী কথা’। এই মঞ্চনাটক না দেখলে একটা অবহেলিত সম্প্রদায় সম্পর্কে ভালভাবে জানা হত না। পরে অবশ্য শিখণ্ডী কথা নামে একটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয়েছিল। এখানে দেখানো হয়েছিল শুধুমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ার কারণে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ থেকে কিভাবে একজন মানুষকে বিচ্যুত হতে হয়।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মায়েরা চাইলেও বাবারা কখনো তৃতীয় লিঙ্গের সন্তানকে পরিবারে রাখতে চায় না। ফলে তাদের স্থান হয় সমাজের আঁস্তাকুড়ে। পরিচয়হীন এক দুর্বিষহ জীবন আরম্ভ হয়। এমনকি মৃত্যুর পরও তাদের জানাজায় কেউ শরিক হতে চায় না। অথচ এদের সবাইকে মহান আল্লাহ তায়ালাই সৃষ্টি করেছেন। অথচ সমাজ তা মানতে চায় না।

এরা মূলধারার শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে না। এদের কেউ চাকরি দিতে চায় না। তাই তারা বাধ্য হয়ে চাঁদাবাজি করে জীবন নির্বাহ করে। অনেকেই এদেরকে পছন্দ করে না। এমনকি এদেরকে অমঙ্গল মনে করে। আমি ঢাকা থেকে যশোর যাওয়ার পথে কয়েকবার ফেরিঘাটে এদের দেখা পেয়েছি। যখন টাকা চাইত তখন সামান্য কিছু টাকা দিতাম। হয়ত এভাবে সারাদিন যা সংগ্রহ করে তাই দিয়ে দিন চলে। আবার এদের সিন্ডিকেট আছে। ডেরায় মাসি আছে। তাদেরকেও ভাগ দিতে হয়। ফলে তারা যতবেশি চাঁদা তুলে তত তাদের জন্য ভালো হয়।

আজকে ঢাকায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য একটা মাদ্রাসা স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা ভালো উদ্যোগ। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে শিক্ষা দেওয়ার এই পদ্ধতি আমার কাছে অভিনব মনে হয়েছে। মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় তাদেরকে অংশগ্রহণ করানোর জন্য যেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই সেখানে একটি মাদ্রাসা এগিয়ে এসেছে। আশা করি সামনে তাদের জন্যও স্কুল ও কলেজ স্থাপিত হবে। এভাবেই যারা সমাজকে বদলায় ইতিহাস তাদেরকে মনে রাখবে!

লেখক: পিএইচডি গবেষক, জাপান

ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :