মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় প্রার্থীর চমক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলে কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি থাকলেও মোটামুটি নিশ্চিত যে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। হেরে গিয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এই দু’জনের পরেই সর্বোচ্চ ভোট যিনি পেয়েছেন, তিনি লিবার্টেরিয়ান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো জরগেনসেন।
এই নির্বাচনে দেশের ১.২ শতাংশ ভোট ইতিমধ্যেই তার ঝুলিতে। প্রায় ১৬ লক্ষ ভোট পেয়েছেন তিনি! যা বাইডেন বা ট্রাম্প- যে কারও ভাগ্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিতে পারত। সেই কারণেই জোকে ঘিরে উৎসাহ তৈরি হয়েছে।
৬৩ বছরের জো সাউথ ক্যারোলিনা ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিদ্যার অধ্যাপক। রাজনীতির ময়দানে তিনি নতুন নন। বরাবর লিবার্টেরিয়ান দলের সমর্থক জো ১৯৯২ সালে সাউথ ক্যারোলিনা থেকে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েন তিনি। আর এ বছর মে মাসে ওয়াশিংটন ডিসিসহ আমেরিকার ৫০টি প্রদেশে লিবার্টেরিয়ান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনীত হন।
আমেরিকার প্রধান দুই রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের নানা নীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব জো। গণকয়েদ, বিদেশের মাটিতে সামরিক অভিযান ও সেনা-মোতায়েন এবং জমকালো যুক্তরাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন- এসবের বিরোধিতা করে আসছে তার দল। এবারও প্রচারে নেমে জো সেই দাবিতে অনড় থেকেছেন।
এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রচার ভিডিয়োয় জো-কে বলতে শোনা গিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের মতো আমেরিকাকেও তিনি ‘সামরিক বলে বলীয়ান’ অথচ পক্ষপাতহীন এক মহান দেশ হিসেবে দেখতে চান। ভোটে জিতলে বিদেশের মাটি থেকে আমেরিকার সেনা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। ফেডারেল আয়কর তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন জো।
১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় লিবার্টেরিয়ান দল। ৪৯ বছরেই আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে উঠে এসেছে লিবার্টেরিয়ানরা। মুক্ত অর্থনীতি, ক্ষুদ্র প্রশাসন এবং সর্বোপরি ব্যক্তি ও নাগরিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এরা। দলের ওয়েবসাইটে লেখা আছে সেই আদর্শের কথা- ‘প্রত্যেক আমেরিকাবাসীর স্বাধীনভাবে বাঁচবার অধিকার আছে। অন্যকে আঘাত না করে নিজের জীবনের লক্ষ্যে তাদের এগিয়ে যাওয়া উচিত’।
এবারের নির্বাচনে একটিও ইলেক্টোরাল ভোটে জেতেননি জো। তবে উইসকনসিন, মিশিগান এবং নেভাডার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশে জো এর ভোটের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তিন প্রদেশেই বাইডেন এবং ট্রাম্পের মধ্যে যে ভোট-পার্থক্য রয়েছে, তার থেকে বেশি ভোট টেনেছেন জো।
জর্জিয়ায় মতো প্রদেশে, যেখানে ট্রাম্প আর বাইডেনের মধ্যে লড়াই চলেছে সমানে সমানে। সেখানে জো পেয়েছেন ১.২ শতাংশ ভোট। বিশেষ করে পশ্চিমের প্রদেশগুলোর গ্রামীণ এলাকায় জো ভাল ভোট পেয়েছেন। আলাস্কা এবং নর্থ ডাকোটায় ২.৭ শতাংশ, সাউথ ডাকোটায় ২.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন জো। এখনও পর্যন্ত ১৬ লক্ষ ভোট পাওয়া জো দলেও দ্বিতীয় জনপ্রিয় নেত্রী।
২০১৬ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লিবার্টেরিয়ান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ৩.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন গ্যারি জনসন। দলের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে জনপ্রিয়।
ঢাকা টাইমস/০৮নভেম্বর/একে