ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়ার গীতিকবিতা: সুখ-দুঃখের সরল সমীকরণ

ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া
| আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৫:০৪ | প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৫১

তোমাকে সুখি করার দায় কি নিয়েছে কেউ

এ ভুবনে যতো প্রাণী আছে!

সবাই নিজের মতো যার যার বলয়ে

নিজের সুখের রাজ্য নিজে গড়ে বাঁচে।

দুঃখের কাহিনি তুমি কারে শোনাবে!

ভূমিকার শুরুতে সে মুখ ফিরাবে।

কার বুকে মর্মের বুক জড়াবে!

বুকের চাতালে সবে ঘুঘু চড়াবে।

সুখের সখারা হয় সুখের অনুরাগি,

সেই সখা দুঃখের আর হয় না ভাগি।

তোমার কষ্ট শুধু তোমাতেই থাক্ ,

তার ভাগি যেই হবে তারই তো বিপাক!

ভয়ে ভয়ে থাকে সব সুখি মহাজন,

তোমার কষ্ট তাকে দুঃখি করে পাছে—

নিজের সুখের রাজ্য নিজে গড়ে বাঁচে।

অশ্রুসজল চোখে যার কাছে যাবে,

সহমর্মিতা নয়; করুণাই পাবে।

যে জীবনে বয়ে যায় সুখের নহর,

পরের দুঃখের সে রাখেনা খবর।

জীবনে জীবন যোগে নয় সে কাতর,

মন তার মন নয়; নিথর পাথর।

নিরাপদ বৃত্তে সে ঘুরপাক খায়,

পরের কষ্ট দেখে গর্তে লুকায়।

তড়তড় বেগে তার সামনে চলা

যে জগত ঘেরা থাকে রকমারি কাঁচে—

নিজের সুখের রাজ্য নিজে গড়ে বাঁচে।।

সুখ-দুঃখ হয়তো-বা বিমাতার সন্তান,

একজন কাছে এলে আর জনের অভিমান।

আয়েশের নামই যদি হয় মহাসুখ,

মর্মপীড়নে সুখ হয়-যে বিমূখ।

সুখ চেয়ে যতো তুমি করো হাহাকার,

বুকে চাপে ততো বেশি বেদনার ভার।

না পাওয়ার বেদনায় শোক আরো জাগে,

দুঃখই তখন আসে আরো পুরোভাগে।

সুখ চেয়ে জ্বালালে যে দেহ-প্রাণ-অস্থি,

বুঝলে না সুখ মানে; শান্তি ও স্বস্তি।

সুখ পাখিটার ডানা চপলা-চপল,

আলেয়ার আলো হয়ে দূরে দূরে নাচে—

নিজের সুখের রাজ্য নিজে গড়ে বাঁচে।

সুখ বলে কিছু নেই; সবই মহামায়া,

সেই মায়া ফেলে মিছে সুখ-সুখ ছায়া।

সুখ যে আসলে কী জানে কোন্ লোক?

তুমি যারে সুখ ভাবো; তাই তবে সুখ।

মানবজীবন এক কুহেলি সৃজন,

নিয়তি লিখেছে তাতে হর্ষ-রোদন।

নিজের পৃথিবী নিজে করে রচনা,

মনের গভীরে সুখ করো যোজনা।

তোমার দুঃখ-সুখ কেবলই তোমার

কানাকড়ি দাম নেই আর কারো কাছে—

সবাই নিজের মতো যার যার বলয়ে

নিজের সুখের রাজ্য নিজে গড়ে বাঁচে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :