নেয়ামত ভূঁইয়া’র কবিতা: যৌতুক জিঞ্জির
কৌতুক করেও যে যৌতুক চায়,
একগাল থুথু মেরে দিও তার গায়।
কৌতুক করা যদি এতো তার সাধ,
থুথু ছাড়া ঘুচবে না তার অপরাধ।
ব্যাধি নিয়ে কৌতুক করে যে অধম,
সেই ব্যাধি একদিন সাজে তারও যম।
যৌতুক মহাব্যাধি, মহা-মহামারী,
ঘরে ঘরে এ কারণে কতো আহাজারি!
প্রগতির শক্তিকে করে ফেলে ক্ষয়,
সমাজ ও সভ্যতার হয় পরাজয়।
চায় যারা যৌতুক তারা দূরাচার,
তারা করে ছারখার সব সংসার।
বিত্তের লোভে তারা হয় বেসামাল,
সমাজের কীট তারা বড়ো জঞ্জাল।
চায় তারা টাকা কড়ি চায় মালামাল,
মানবের রূপে তারা শকুনের পাল।
বিত্তের বেসাতিতে পায় তারা সুখ,
জানে না যে ভয়ানক ব্যাধি যৌতুক।
যৌতুকে যতো বাড়ে বিত্ত বাহার,
এই ধন ধন নয়, হার মানা হার।
উপহার-উপচার, যেই নামই ধরে,
যৌতুকে মর্যাদা নরকেই পড়ে।
বর হলে বর্বর চায় যৌতুক,
সভ্যরা চায় স্ত্রীর হাসিমাখা মুখ।
যৌতুক চাইবে যে নেই তার ক্ষমা,
তার শেষ ঠিকানাটা নালা-নর্দমা।
ধনগোলা যতো গড়ে স্বর্ণের ইট,
তার মনে বাস করে কিলবিলে কীট।
যৌতুক লেনদেনে বাড়ে মলিনতা,
যৌতুক দেয়া নেয়া কোন সভ্যতা?
কন্যাকে ভাবে যারা পণ্যের মতো,
কী মলমে শুকাবে সে সমাজের ক্ষত?
শান দিয়ে জাগ্রত করো শুভবোধ,
সবে মিলে যৌতুক করো প্রতিরোধ।
যৌতুক প্রতিরোধে দিন যতো যাবে,
সমাজের দেহটাকে কুড়ে কুড়ে খাবে।
কোভিডের চেয়েও যা মন্দ অসুখ,
জেনে রাখা ভালো; এর নামই যৌতুক।
যেই বিষ-বৃক্ষটা এতো বিস্তৃত,
ডালপালা দেখে তার এ সমাজ ভীত।
কেউ যদি কোনোদিন চায় যৌতুক,
এ সমাজ যেনো তার মুখে মারে থুক।
যৌতুক কম বেশি; যে যা-ই নিক,
ধিক্ তারে, ধিক্ তারে, ধিক্ শতধিক।